নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ : মানুষের পাশে থেকে সেবা দিতেই শ্যামপুর বন্ধন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান শ্যামপুর বন্ধন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মানুষের জীবন বাঁচিয়ে, মুখে হাসি ফুটিয়ে তৃপ্তি পান এর সদস্যরা।
প্রতিদিন বহু অসুস্থ রোগীকে দেন রক্ত, পাশাপাশি মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড ও বৃক্ষরোপণের মতো কর্মসূচি পালন করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির সদস্যরা। সমাজে আশার আলো ছড়াচ্ছেন সংগঠনটির কর্মীরা।
অসহায় মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ সংগঠনের নানাবিধ কার্যক্রমে গোটা এলাকার মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে অতি অল্পসময়েই।
তিন বছর আগে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। শ্যামপুর ইউনিয়নের কিছু যুবক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বেশ কিছু উদ্যোমী যুবক।
সংগঠনটি শুরুতে শুধু রক্তদান করলেও ক্রমশ সংগঠনটির কর্মকাণ্ডের পরিধি বাড়তে থাকে। বিগত তিন বছরে তাঁরা অসংখ্য মানুষকে রক্তদান করার পাশাপাশি মাদক প্রতিরোধ, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, বৃক্ষরোপণসহ নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।
শ্যামপুর বন্ধন স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের সদস্যরা সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মাসে স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। এলাকার কোথাও কোনো অসুস্থ রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে ছুটে যান এ সংগঠনের সদস্যরা।
শিবগঞ্জ উপজেলা সহ সারা বাংলাদেশে রক্ত সরবরাহ করেন তাঁরা।এভাবে বিগত তিন বছরে শুধু শিবগঞ্জে অন্তর্ত ২৯৭ ব্যাগ রক্ত দিয়েছে সংগঠনটি। রক্ত পেয়েছেন গর্ভবতী মা, থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগী, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী, দুর্ঘটনার শিকার মানুষ সহ বিভিন্নজন।
এ বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি মো. রায়হান আলী জানান, মানবসেবাকে সামনে রেখেই দেশের এই সংকট মুহূর্তে কাজ করছি। মানুষের সেবা প্রদানে যে আনন্দ ও তৃপ্তি রয়েছে তা অন্যকিছুতে নেই।
তিনি জানান, করোনাকালে এক প্রকার জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিভিন্ন সেবামুলক কাজ করেছি প্রত্যেকটি সদস্য। আমি মনে করি বিপদ ও সংঙ্কটাপর্ণ সময়ে আমারদের কেই এগিয়ে অসতে হবে। সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা পেলে আমরা আরও বেশি কাজ করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। আমি সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছি।
এ সংগঠনটির ব্যাপারে ডা. আবু তাহির বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবে জনজীবন যখন স্থবির তখন শ্যামপুর ইউনিয়নের কিছু তরুণ তরুণী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবতায় এগিয়ে এসেছেন। কোথাও রক্ত না পেলে তাদের সংগঠনের সদস্যরা রক্ত দিচ্ছে, এক কথায় মানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছেন তারা।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগিয়ে এসেছে। তারাও আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সহযোগিতা করছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মানুষকে আহ্বান করছে যা, একটি ভালো উদ্যোগ। করোনা মোকাবিলায় তাদেরও ভূমিকা আছে। অব্যাহত থাক সেবাদানকারী শ্যামপুর বন্ধন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এটাই প্রত্যাশা।