মোঃ মিজানুর রহমান,(বাগমারা,প্রতিনিধি):
নিজের জন্য ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া না করে ছুটে বেড়িয়েছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। ভোট পেয়ে জয়ীও হয়েছেন। এবারও সেই কাজটিই করছেন তিনি।
তবে এবার নিজের জন্য নয়, স্বামীর জন্য ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক ও প্রথম নারী মেয়র খন্দকার শায়লা পারভিন। তাঁর এই প্রচারণা দৃষ্টি কেড়েছে ভোটারদের।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ ধাপে ১৪ ফেব্রুয়ারি তাহেরপুর পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একজন করে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র আবুল কালাম আজাদ ও বিএনপির সাবেক মেয়র আবু নঈম শামসুর রহমান মিন্টু। মোট ভোটারের সংখ্যা ১৪ হাজার ৬১৯।
এবারের নির্বাচনে স্বামীর পক্ষে গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন সাবেক মেয়র খন্দকার শায়লা পারভিন। তিনি বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী। তিনি এই পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত নারী মেয়রও ছিলেন। পরে বর্তমান মেয়রের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামী আবুল কালাম আজাদ ২০১০ ও ২০১৫ সালে মেয়র নির্বাচত হন।
কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খন্দকার শায়লা পারভিন প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে স্বামীর নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। নিকট কিছু নারী আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে আলাদা আলাদা প্রচারণা চালাচ্ছেন। পৌরসভার বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ছাড়াও তাঁদের কাছ থেকে ভোট চাচ্ছেন স্বামীর নৌকা প্রতীকে। এ সময় তিনি বিগত সময়ে তাঁর ও স্বামীর উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। পৌরসভা গঠনে তাঁর পরিবারের অবদানের কথাও স্মরণ করে দিচ্ছেন তিনি। এ ছাড়া এবারের নির্বাচনে স্বামীর ঘোষিত ১৯ দফা ইশতেহারের কপিও তুলে দিচ্ছেন ভোটারদের হাতে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচারণা চালাচ্ছেন সাবেক এই মেয়র। তাঁর এই প্রচারণা ভোটারদের দৃষ্টি কেড়েছে।
পৌরসভার ১৫০-২০০ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাবেক এই নারী মেয়রের প্রচারণায় তাঁরা মুগ্ধ। তিনি নিজেদের আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। তাঁর ভেতরে কোনো অহংকার দেখছেন না। সরাসরি লোকজনদের কাছে চলে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ও করছেন তিনি। তাঁর এই আচরণ শুধু নির্বাচন উপলক্ষে নয়, নির্বাচনের আগেও তাঁরা একইভাবে তাঁকে পেয়েছেন। বিভিন্ন কাজে মেয়রের বাড়িতে গেলে তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলাসহ ভালো আচরণও করে থাকেন তিনি। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে লোকজনের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবরও রাখেন তিনি।
তাহেরপুর কলেজের অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, খন্দকার শায়লা পারভিন পৌরসভার নির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র ছিলেন। তাঁর বাবাও একই পৌরসভার মেয়র ছিলেন। এই কারণে জনগণের সঙ্গে মেশার তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। স্বামীর জন্য তিনি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন, তা দেখে পৌরবাসী মেয়রের প্রতি আরও দুর্বল হয়ে পড়ছেন।
খন্দকার শায়লা পারভিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি রাজনীতি পরিবারের সদস্য। লোকজনের সঙ্গে মিশতে ও তাঁদের পাশে থাকতে ভালো লাগে। পৌরসভার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে স্বামীর জন্য ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। এতে ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তাহেরপর পৌরসভার মেয়র ও এবারের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, তাঁর স্ত্রী ও স্বজনেরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। তাঁর মতো তিনিও (স্ত্রী) ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্চ্ছেন। ফলে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি।