পুনাকের সহযোগিতায় পড়াশোনা শেষ করে অন্ধ বাবার পাশে দাড়াতে চায় তহুরা
হাফেজ তারাজুল ইসলাম জন্ম থেকেই অন্ধ। বাড়ি রংপুর সদর উপজেলার কুর্শা বলরামপু গ্রামে। এলাকায় তিনি অন্ধ হাফেজ হিসেবেও পরিচত। পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত বসতভিটা ছাড়া তেমন কোন আবাদি জমি নেই। ঘরে আছে স্ত্রী ও ৩ ছেলে মেয়ে। সরকারের দেয়া প্রতিবন্ধী ভাতা ও মানুষের সাহায্যে চলে তার সংসার। এরই মাঝে অনেক কষ্টে ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। বড় মেয়ে তহুরা এবার স্থানীয় স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাশ করেছে। তহুরার স্বপ্ন সে পড়াশুনা করে বড় হয়ে বাবার সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু টাকার অভাবে তাহাজুল তার মেয়েকে কলেজে ভর্তি হতে পারে নি। তহুরার স্বপ্নপূরণে এবার তার পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে রংপুর জেলা পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)।
আজ সকাল ১১টায় রংপুর জেলা অফিসার্স মেসে তহুরা ও তার বাবার হাতে কলেজে ভর্তি, বইকেনাসহ পড়াশুনার খরচ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ১০,০০০/- টাকা উপহার দেন জেলা পুনাকের নেত্রীবৃন্দ।
রংপুর জেলা পুনাকের সভানেত্রী সোনিয়া আক্তারের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি জনাব দেবদাস ভট্টাচার্য, বিপিএম মহোদয় এর সহধর্মিণী মধুছন্দা ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুনাকের সহসভানেত্রী লোটাস রায়, মাহমুদা হোসেন, ডা. আশেকা আকতার প্রমুখ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও এস্টেট) জনাব আনোয়ার হোসেন ও সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ ও সি সার্কেল) জনাব মোঃ আশরাফুল আলম পলাশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মধুছন্দা ভট্টাচার্য বলেন, পুনাক রংপুর শাখা প্রতিনিয়ত অসহায় মানুষের পাশে দাড়াচ্ছে। পুনাকের এমন মানবিক কার্যক্রম সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। এসময় তিনি অসহায় তহুরার পাশে দাড়ানোর জন্য পুনাক রংপুরের নেত্রীবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
পুনাক রংপুরের সভাপতি সোনিয়া আকতার বলেন, পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জার দিক নির্দেশনায় রংপুর পুনাক বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমরা রংপুরে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি, অসহায় শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছি। পুনাক সবসময় অসহায় মানুষের পাশে আছে। এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। এসময় তিনি সমাজের বিত্তবানদের অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান।
রংপুর জেলা পুনাকের সহযোগিতায় আবারও লেখাপড়ার সুযোগ পেয়ে তহুরা আনন্দে কেদে ফেলেন। তহুরার বাবা অন্ধ হাফেজ তাহাজুল বলেন, টাকার অভাবে মোর বেটির পড়াশুনা বন্ধ হয়া গেছিলো। পুনাকের সাহায্যে এবার মোর বেটির পড়াশুনা চালাইম। পুনাকের সাহায্যে তহুরা উচ্চশিক্ষিত হয়ে নিজের পায়ে দাড়াতে চায়, অন্ধ বাবার সংসারে আলো ফোটাতে চায়।