• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৭ অপরাহ্ন

গোমস্তাপুরে কীটনাশক মুক্ত নিরাপদ সবজি চাষ

Reporter Name / ২৩২ Time View
Update : শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের মহানন্দা নদীর তীরে বৃহৎ এলাকা জুড়ে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় আইপিএম মডেল ইউনিয়ন কৃষি মাঠে সবজি চাষ করা হচ্ছে ।

গোমস্তাপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আইপিএম মডেল ইউনিয়ন, বিভিন্ন মৌজায় প্রায় ১০০ একর জমিতে ৫০০ জন কৃষককে ২০টি গ্রুপে ভাগ করে প্রতি গ্রুপে ২৫ জন কৃষকের মাধ্যমে নিরাপদ ও কীটনাশকবিহীন সবজি চাষ করা হচ্ছে।

শসা চাষী নুরুল ইসলাম বলেন, আইপিএম পদ্ধতিতে শসা চাষ এই প্রথম করছি । তবে এই পদ্ধতিতে শসা চাষে ফলন ভালো হচ্ছে । এই শসা নিরাপদ রাসায়নিক ও কীটনাশক বিহীন চাষ করা হচ্ছে ।
তিনি আরও বলেন, ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ দেওয়ার কারণে বেশি লাভবান হচ্ছি । বাজারে যেসব কীটনাশকযুক্ত শসা তার থেকে এই শসার দাম কেজিতে ৩/৫ টাকা বেশি এবং এর স্বাদও বেশি। এই শসার দাম বেশি হলেও, স্বাদ ভালো ও কীটনাশক বিহীন নিরাপদ হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা বেশি রয়েছে ।

২০ শতক জমিতে আইপিএম পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করছেন আসরাফুল হক। তিনি নাচোল নিউজ কে জানান, সাধারণ টমেটো চাষের চেয়ে আইপিএম পদ্ধতিতে বেশি লাভবান হচ্ছি । যা বাজারের টমেটোর তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা বেশি পাওয়া যাচ্ছে । তিনি আরও বলেন, এর আগে আমি টমেটো চাষ করেছিলাম, যে খরচ হয়েছিল তার তুলনায় অর্ধেকেরও কম খরচ হচ্ছে এই আইপিএম পদ্ধতিতে ।

ফড়িং উদ্দিন বেগুন ও করলা চাষী । ১৫ কাঠা বেগুন ও ৫ কাঠায় করলা চাষ করেছেন। তিনি বেগুন ১৫টাকা ও করলা ৪০ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি করেন । ফড়িং উদ্দিন বলেন, আইপিএম পদ্ধতিতে কীটনাশক মুক্ত ও নিরাপদ সবজি চাষ করায় বাজারে এর চাহিদাও বেশি রয়েছে ।

আইপিএম মডেল ইউনিয়নের আরেক টমেটো চাষী আব্দুল মান্নান । তিনি জানান, নিরাপদ ও কীটনাশক মুক্ত টমেটো আইপিএম পদ্ধতিতে চাষ করছেন । তার জমির পরিমাণ ২০ শতক । সাধারণ টমেটোর তুলনায় বেশি ফলন হচ্ছে বলে জানান কৃষক মান্নান । তিনি আরও বলেন, বাজারের টমেটোর থেকে কেজিতে ১০ টাকা করে বেশি লাভবান হচ্ছি । এই নিরাপদ সবজি চাষে জৈব সার, বালাই নাশক, ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ ফাঁদ দিয়ে সহযোগিতা করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,গোমস্তাপুর । তিনি আরও জানান ফেরোমন ফাঁদ হচ্ছে সবজির যেসব শত্রু পোকা সেই পোকাগুলো ধ্বংস করে এবং বন্ধু পোকাগুলো টিকে থাকে । হলুদ আঠালো ফাঁদ হলো বিভিন্ন ধরনের পোকাগুলো এই আঠায় লেগে যায় ।

নিরাপদ সবজি চাষীরা গোমস্তাপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে দাবী জানিয়েছেন, যেন তাদের কীটনাশক মুক্ত ও নিরাপদ সবজি বাজার করে দেওয়া হয় । এই বাজার করে দিলে তারা অধিক লাভবান হবেন ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর সহযোগিতায় আইপিএম মডেল ইউনিয়ন, বিভিন্ন মৌজায় প্রায় ১০০ একর জমিতে ৫০০ জন কৃষককে ২০টি গ্রুপে ভাগ করে প্রতি গ্রুপে ২৫ জন কৃষকের মাধ্যমে নিরাপদ রাসায়নিক ও কীটনাশক বিহীন সবজি চাষ করা হচ্ছে। সবজি নিরাপদ রাখার জন্য ফেরোমন ফাঁদ,হলুদ ফাঁদ সহ বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবহার করা হচ্ছে।
ফেরোমন ফাঁদ হচ্ছে সবজির যেসব শত্রু পোকা সেই পোকা গুলো ধ্বংস করে এবং বন্ধু পোকা গুলো টিকে থাকে । হলুদ আঠালো ফাঁদ হলো বিভিন্ন ধরনের পোকা গুলো এই আঠাই লেগে যায় এবং সবজি নিরাপদ রাখে ।
আইপিএম পদ্ধতিতে সবজি চাষে পূর্বে যে খরচ হতো তার থেকে কম খরচ হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে । বাজারের সবজির থেকে কেজিতে ১০ টাকা বেশি দাম পাচ্ছে ।

এম.এস.হোসেন/


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category




error: Content is protected !!
error: Content is protected !!