• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সমসপুর দাখিল মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে কোষাগার শূন্য করার অভিযোগ শিক্ষকদের ! শিবগঞ্জে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সেভ দ্য রোডের ১৫ দিনব্যাপী সচেতনতা ক্যাম্পেইন সমাপ্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিম বুথ উদ্বোধন করলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসাক এ.কে.এম গালিভ খাঁন নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক নুরুল হক ফনি মাস্টার এর মৃত্যু। নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক নুরুল হক ফনি মাস্টারের মৃত্যু। নাচোল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১০জনের মনোনায়নপত্র জমা। নাচোল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চেয়ারম্যান পদে ৩.ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জনের মনোনয়ন পত্র জমা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বিল্লাল হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন “ঢাকাস্থ নাচোল উপজেলা সমিতির নাচোলে ঈদ পুনর্মিলনী”

বিচার বিভাগে’রক্তক্ষরণ’

Reporter Name / ২৪৯ Time View
Update : শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৩

মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের কেন্দ্রস্থল বিচার বিভাগ যখন আক্রান্ত হয়, তখন সভ্য রাষ্ট্র ব্যবস্থার কিছু অবশিষ্ট থাকে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিজ্ঞ বিচারক মহোদয়কে এজলাস চলাকালে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ টেনে নামাতে চাওয়ার স্পর্ধা দেখানো দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করার মতো গর্হিত অপরাধ বলে মনে করছি। যা সমস্ত নির্লজ্জতা, ধিক্কার জানানোর সীমা অতিক্রম করেছে। সাধারণ মানুষের হৃদয় আজ রক্তাক্ত।

একটি দেশের জনগণ তাঁর ক্ষমতাকে রাষ্ট্রের হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকেন, সে দেশে শক্তিশালী স্বাধীন বিচার বিভাগ আছে বলে। যে বিভাগটি সর্ব অবস্থায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। যেস্বত্ত্বা রাষ্ট্রের মতো আনুগত্য প্রার্থী না; কিন্তু স্বাক্ষর-নিরক্ষর সকল নাগরিক তাঁর প্রতিটি সিদ্ধান্ত চরম শ্রদ্ধায় মেনে নেয় এবং মানতে বাধ্য। রাষ্ট্রের তিনটি অর্গান আইন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ। প্রথম দু’টি বিভাগে জনগণ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা সকল কার্য পরিচালনা করে। যাঁদেরকে জবাবদিহিতা করতে হয়। অপর বিভাগটি জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে; সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচারে তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। প্রতিটি বিচারক তাঁর সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে স্বাধীন এবং সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। ন্যায়বিচারটি জনগণের বোধসীমার বাইরে অবস্থান করে তখন উচ্চ আদালতে প্রতিকারের বিধান আছে। এরপরও চলমান আইনে সমাধান না আসলে প্রতিবাদ-জনদাবি; সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি কিংবা সরকার তাঁর বিশেষ ক্ষমতার প্রয়োগ করে জনগণের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে, ফৌজদারী কার্যবিধিতে সে সুযোগ আছে।

বিচারককে মান্য করা অর্থ হচ্ছে ন্যায়বিচার রক্ষার মতো পবিত্রতায় আপনি বিশ্বাস করেন। এই বিশ্বাসই আপনাকে সাধারণ মানুষ হিসাবে সভ্য সমাজে নিরাপদে বসবাস করার অধিকার দিয়েছে। আপনি একটি নাগরিক পরিচয় বহন করেন। আপনার হয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাষ্ট্র। এর ব্যত্যয় ঘটানো মানুষদের জন্য সভ্যতা না। আপনাদের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে।

মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটানোর মতো ন্যাক্কারজনক গুরুতর বিষয়গুলো অবশ্যই আলাদাভাবে দেখতে হবে এবং এর পুনরাবৃত্তি চরমতম লজ্জা। কিন্তু আমরা মনে হয় লজ্জা পেতেও ভুলে গেছি। এমন সময়ে বিচার বিভাগ স্বাধীন (পৃথকীকরণ) হয়েছে যখন অপর দু’টি বিভাগে প্রতিনিয়তই রক্তক্ষরণ ঘটেছে। এরজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে আমরা সাধারণ মানুষের দ্বায়ভার কম না। সবচেয়ে দ্বায়ী অসাধারণ মানুষগুলো। এই অসাধারণ মানুষগুলো বৈরী সময়ে যেমন সংঘবদ্ধ গ্রুপ জন্ম নেয় তেমনভাবে একট্টা হয়ে নির্লজ্জভাবে শ্রেণী স্বার্থ আদায় করেছে। আইন সেসময় যেন দেখেও দেখে নি। উত্তরবঙ্গের মানুষ একসময় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমন অসাধারণের দ্বারা সংঘটিত সন্ত্রাস দেখেছে। ক্লিনিকে ক্লাস ফাইভ পাস পিয়ন দিয়ে অপারেশন তদারকি করে একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটানো চিকিৎসক নামধারী অসাধারণ মানুষগুলোকে রক্ষা করতে পাবলিক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জনগণকে জিম্মি করা হয়েছে, গরীব মানুষ মরেছে। আমরা ভদ্র সমাজ নীরব থেকেছি। মাঝেমধ্যেই এসব অসাধারণরা স্পর্ধা দেখায়। কিন্তু আইনজীবী সমাজ সবসময় তাঁর বাইরে অবস্থান করে এসেছে। এর ব্যতিক্রম আমাদেরকে শঙ্কিত করেছে, আমরা আজ লজ্জিত। এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক’দিন আগে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো হয়েছিলো। অন্ধ বিকারগ্রস্ত সমাবেশ দেশের একপ্রান্তে মন্দিরে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার অপরাধে অপরপ্রান্তের নিরীহ হিন্দু ধর্মালম্বীদের মন্দির, বাড়ি-ঘরে হামলা করেছে। এর পেছনে কারা আছে আজও তার হদিস জানি না। প্রকৃতির নির্মম সত্যটা হলো- শহর পুড়লে দেবালয় এড়ায়না। এটাই ধ্রুব সত্য। ”র‌্যাবের বন্ধুকযুদ্ধে” সন্ত্রাস নির্মূল ফর্মূলা দিয়ে সমাজের ক্ষত দূর করা কখনও সম্ভব হয়নি, বরং তা ক্যান্সার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করার আশঙ্কা থাকে।

আমরা যাঁরা বিচারাঙ্গনের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততা বোধ করি তাঁদেরকে প্রত্যেককেই বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আমরা অর্জন-বিসর্জনের হিসাব কষছি। সেখানে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ইতিহাস ২০০৭ সালের। সাধারণ মানুষের চোখের পানির দামে কেনা বিচার বিভাগের এই অর্জন স্রষ্টার দান বলতে হয়। সাধারণ মানুষকে বিচার বিভাগের অনেক কিছু দেয়ার আছে। বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করতে হবে জনগণকে সোচ্চার থাকতে হবে। বিচার বিভাগের পবিত্রতা রক্ষা আপনার আমার সকলের দায়িত্ব।

এ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলা
আহ্বায়ক, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চাই
ও সাধারণ সম্পাদক,
রাজশাহী প্রেসক্লাব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category




error: Content is protected !!
error: Content is protected !!