গোমস্তাপুরে পুলিশ কর্তিক রহনপুর পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর শেফালী নির্যাতিত
গোমস্তাপুর(চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাত দিনের বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করেছে। শনিবার সকালে (২৯মে) রহনপুর পৌরসভার ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মহিলা আঃলীগের সহ-সভাপতি শেফালী বেগম ও তার ছেলে নুহু ইসলাম সকাল সাড়ে ১০টায় মোটরসাইকেলযোগে ৬ নং ওয়ার্ড থেকে ৪ নং ওয়ার্ডে যাওয়ার পথে কলেজ মোড়ে অস্থায়ী পুলিশ চেকপোস্টে তাদের বাঁধা প্রদান করে। এবং তাদের পরিচয় পত্র দেখালে কথা না শুনে হঠাৎ দায়িত্বরত পুলিশ এস. আই. শরিফুল ইসলাম ও তার সহযোগী কনস্টেবল ৭/৮ জন মিলে লাঠিচার্জ করে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনার প্রতি চেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কাউন্সিলর শেফালী বেগম বলেন, আমি ও আমার ছেলে ত্রাণ বিতরণ এর জন্য কলেজ মোড় দিয়ে যাচ্ছিলাম।আমার পরিচয় দেওয়ার সত্বেও কোন কথা না বলে তাকে এস.আই. শরিফুল ইসলাম ও ৭/৮ জন কনস্টেবল এলোপাতাড়িভাবে তাকে মারধর করতে থাকে। আমি মারতে বারণ করার সত্ত্বেও আমাকেও মারধর করে জখম করেছে। তাছাড়া এস.আই. শরিফুল ইসলাম বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করে এবং বেশি কথা বললে মাদক মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে থানায় পাঠিয়ে দিবে এই হুমকি প্রদান করে।
অপরদিকে কাউন্সিলরের ছেলে নুহু ইসলাম বলেন, আমরা যেহেতু জনসেবামূলক কাজ করে থাকি। সেক্ষেত্রে আমাদের রাস্তায় তো থাকতে হবে। আমি ও আমার আম্মা মোটরসাইকেল যোগে কলেজ মোড় দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে দায়িত্বরত পুলিশ আমাদেরকে থামতে বললে আমরা থামি। সে পুলিশ অফিসার আমাদের চিনার সত্বেও আমার আম্মার পরিচয় পত্র দেখায়। কোন কথা না বলে আমাকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারতে শুরু করে। এতে আমার হাত ও পা গুরুতরভাবে জখম হয়েছে। এবং আমি ও আমার আম্মা গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছি।
বিষয়টি নিয়ে এস. আই. শরিফুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এটা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। কাউন্সিলরের ছেলে আমাদের সাথে একটু বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে গেছিলো যার ফলে আমরা তাকে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়।
রহনপুর কলেজ মোড়স্থ এক ফল বিক্রেতা জানান, ৪/৫ জন পুলিশ তাদেরকে এলোপাতাড়িভাবে মারতে থাকে। কামরুজ্জামানের ফলের দোকানের সামন থেকে মারতে মারতে তাদেরকে রাজকীয় হোটেলের সামনে নিয়ে যায়। এবং সে ছোটাছুটি করেও রক্ষা পায় নি।তাদের মারার ভয়ে একসময় তার আম্মা বাঁধা দিতে গেলেও তাকেও মারতে শুরু করে এতে তারা দু’জন গুরুতরভাবে যখন হয়।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী সিরাজুল ইসলাম টাইগারের সাথে কথা বলে জানা যায়, আমরা সাধারন মানুষের জন্য মাঠে করোনাকালীন সময়ে কাজ করে যাচ্ছি, ইতিপূর্বেও করেছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে মেডিকেলে গতকালকে যাচ্ছিলাম। আমাকে পুলিশ যেতে দেয়নি। আর আমিও দেখেছি একজন তরকারি ক্রয় করে বাড়ি ফেরার পথে তাকে বাড়ি যেতে দেইনি, উল্টো লাঠিচার্জ করেছে তার ওপরে। ওষুধের প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধ কিনতে যাওয়ার পথে তাকেও যেতে দেয়নি এই পুলিশ। হ্যাঁ এটা সত্য! করোনার ভয়াবহতা আমাদের জেলায় অনেকটা বেড়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকাটা খুবই সুন্দর হচ্ছে। কিন্তু যারা নিষেধাজ্ঞার বাইরে আছে তাদেরকেতো কার্যক্রম করতে দিতে হবে। মানুষের জীবন-জীবিকার তো প্রয়োজন রয়েছে। সেক্ষেত্রে তাকে বাইরে যেতেই হবে। তাই আমি পুলিশ প্রশাসনের নিকট অনুরোধ করছি। আপনারা যেটা জনগণের প্রতি অবিচার করছেন সেটা মোটেও আমাদের কাম্য নয়।