• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৩:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নাচোলে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠিত মহেশপুরে ড্রাগন চাষী মিলনের ২৬শ’ ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা কোটালীপাড়া জোর পূর্বক ৭০ বিঘা ঘের তৈরি নাচোলে বিশ্ব “মা” দিবস উদযাপন নাচোলে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কে সংবর্ধনা নাচোলে বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু গোমস্তাপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  আশরাফ আলী আলিম নির্বাচিত নাচোল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আব্দুল কাদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে কামাল উদ্দিন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শামীমা ইয়াসমিন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত। বুধবার নাচোল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, চেয়ারম্যান পদে ২জন,ভাইস চেয়ারম্যান পদে-৩জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে-২জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আজ বুধবার নাচোল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন, চেয়ারম্যান পদে-২জন,ভাইস চেয়ারম্যান পদে-৩জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে-২জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অবৈধ ভাবে মাটি উত্তোলন

Reporter Name / ৩০২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কৃষি জমি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী একাধিক সিন্ডিকেট

ডি এম কপোত নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন গ্রামঞ্চলে শতশত বিঘা জমিতে অবৈধ ভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে কৃষি জমির মাটি। আর এ সকল অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে অর্থলোভী প্রভাবশালী কিছু সংখ্যক কতিপয় অসাধু ব্যক্তি।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা নিয়ে সরকার ও প্রশাসন যখন ব্যস্ত সময় পার করছেন, দেশব্যাপী সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন চলছে। ঠিক তখনই অবৈধ ভাবে মাটি ও পুকুর খনন কার্যক্রমের প্রতিযোগীতা চলছে পুরো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জুড়ে। যেখানে সকল শ্রমিক কাজ করছেন মাস্ক না পড়েই। স্বাস্থ বিধি মানা তো দূরের কথা, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই শ্রমিকরা কাজ করছেন। শ্রমিকরা জানান, তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার পদ্মা নদীর পাড় থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী একাধিক চক্র। পদ্মা নদীর একাধিক পয়েন্টে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। আর বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় এক্সকেভেটর মেশিন দিয়ে কেটে নেয়া হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ট্রাক্ট্রর মাটি পরিবহন অব্যাহত রয়েছে। এসব ফসলি জমির মাটি চলে যাচ্ছে পাশ্ববর্তী ইটভাটা গুলোতে। মাটি পরিবহনকারী ট্রাক্ট্ররগুলোর কারণে ভেঙে যাচ্ছে গ্রামীণ সড়কগুলো। ধুলো-বালির কারণে এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যার কারণে পদ্মা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সড়ক ভাঙ্গন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

সরজমিনে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজপুর ইউনিয়নের জিলানী মোড় এলাকার পদ্না নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে কৃষি জমির মাটি। আনুমানিক ২৫ ফিট গর্ত করে এক্সকেভেটর মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে কেটে নেওয়া হচ্ছে কৃষি জমির মাটি। দেখার যেন কেউ নেই। এ যেন এক বিশাল খাল।

শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজপুর ইউনিয়নের ছোটো চখ পাড়া গ্রামের হুমায়ন হাজির ছেলে সেরাজুলের নেতৃত্বে প্রভাবশালি একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে এইসব অবৈধ কর্মকান্ড। তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া তাদের সিন্ডিকেটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি প্রতিবেদকে ম্যানেজ করার জন্য জোরপূর্বক টাকা পকেটে ঢুকিয়ে দেন।

প্রতিবেদক তাকে জিজ্ঞেস করে কেন আপনি আমাকে টাকা দিচ্ছেন। জবাবে তিনি বলেন ভাই আমরা অবৈধভাবে কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছি। সবাইকে ম্যানেজ করে চলতে না পারলে মাটি কাটা বন্ধ হয়ে যাবে। তার জন্য আপনার মতো আরও সাংবাদিক আমাদের কাছে আসলে এভাবে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করি এবং এটা আপনার তেল খরচ দিলাম। যেহেতু এত কষ্ট করে আমাদের কাছে এসেছেন সেহেতু সামান্য তেল খরচ দিয়ে আপনাকে আপ্যায়ন করলাম। তাই আপনাকেও ওদের মতনই সম্মান করলাম।

সে আরও বলে নিউজ করার প্রয়োজন নেই ভাই, মাঝেমধ্যে এসে সম্মানি নিয়ে যাবেন। যারাই অবৈধ ভাবে মাটি উত্তোলন করছে তারাই এভাবে অন্যান্যদের ম্যানেজ করে চলছে। প্রতি বছর পদ্না নদী ভাঙনে বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি ও ঘরবাড়ি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেছেন ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা প্রতিবেদককে জানান, প্রতিদিন শত শত মাটিভর্তি ট্রাক্ট্রর চলাচল করায় পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। দিনের পর দিন এভাবে কৃষি জমির মাটি খনন করার কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে যার ফলে বন্যার সময় নদীতীরবর্তী এলাকাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।

বাঁধ এলাকা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে পড়ছে। তারা আরও বলেন, বালু ও মাটি পরিবহনকারী ট্রাক্ট্রর ও ট্রাকের ধুলোয় এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ধুলো বালির কারণে প্রতিদিন এলাকার কেউ না কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল পর্যন্ত ভর্তি হচ্ছেন। গ্রামীণ পাকা ও কাঁচা সড়ক ভেঙে যাওয়ায় জনসাধারণের ভোগান্তি দিন দিন বেড়ে চলেছে। মাটি ব্যবসায়ীদের ভয়ে তারা কেউ অভিযোগ করতে সাহস পারছেনা।

কি কারণে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, তারা খুব শক্তিশালী সিন্ডিকেট ও প্রভাবশালী লোক। এলাকাবাসীর মধ্যে থেকে কেউ অভিযোগ দিলে তাকে তারা বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করবেন।

ভূমিদস্যুদের ব্যাপারে অবিলম্বে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসীসহ সুশীল সমাজ। অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন বন্ধ না করলে ভবিষ্যৎ কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাবে। যার ফলে ফসল উৎপাদন হবে কম। ভবিষ্যতে তখন খাদ্য সংকটে পড়বে বাংলাদেশ।

কৃষি জমি ধ্বংস হবার আগেই এর রক্ষা করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন সরকার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন, এমনটাই আশা করেন সচেতন মহল।

এ প্রসঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব আল রাব্বি জানান, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। এমন কোন অভিযোগও আসেনি। অফিস থেকে কর্মকর্তা পাঠিয়ে খোঁজ নিচ্ছি। অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category




error: Content is protected !!
error: Content is protected !!