• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঝিনাইদ সীমান্ত থেকে ৩ কোটি টাকা মূল্যের ৩ পিস স্বর্ণের বারসহ আপন দুই ভাইকে আটক করেছে ৫৮ বিজিবি নাচোল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাবু পুলিশের হাতে গ্রেফতার! গোদাগাড়ীতে পদ্মা নদীতে গোসল করতে গিয়ে দুই ছাত্রের মৃ’ত্যু গোপালগঞ্জে আইনগত সহায়তা দিবস ২০২৪ পালিত নাচোলে জাতীয় আইন গত সহায়তা দিবস-২৪ পালিত গোমস্তাপুরে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায় এসির তার চুরির ৩ ঘন্টার মধ্যে চোরকে আটক করে মালামাল উদ্ধার করল পুলিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস পালিত নাচোলে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলার বরাদ্দের অর্থ লোপাটের অভিযোগ খামারিদের নাচোলে গুণীজন সংবর্ধনা ও শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি প্রদান

ঘাটে ইজারা ছাড়াই টাকা উত্তোলন, অবৈধভাবে নদীর উপর রাস্তা নির্মাণ / সরকারকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি

Reporter Name / ২৮৫ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২

• কৃষি জমি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
• নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী একাধিক সিন্ডিকেট ও বিএনপির ঊর্ধ্বতন মহল।
• বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও শহর রক্ষা বাঁধ ভাঙন ঝুঁকিতে
• বেহাল দশা গ্রামীণ সড়কের
• সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসার অভয়ারণ্য।

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ :
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের বহলাবাড়ী সংলগ্ন জাহাঙ্গীর পাড়া ঘাট। প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরেও শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ১ম ও ২য় ধাপে ইজারা প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করেন। তারপর সিডিউল হোল্ডাররা সিডিউল ক্রয় করেও রহস্য জনক কারণে সিডিউল ড্রপ করতে পারেন নাই। যার ফলে ১৪ মে ২০২২ পর্যন্ত জাহাঙ্গীর পাড়া ঘাট টি ইজারা হয়নি। ইজারা না হলেও অবৈধভাবে ঘাট পারাপারের জন্য জনগণের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন বহলাবাড়ী গ্রামের বাহার আলীর ছেলে পুলিশে কর্মরত এ এস আই খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। উক্ত সিন্ডিকেটে বিএনপির একাধিক প্রভাবশালি ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়।

বহলাবাড়ী সংলগ্ন জাহাঙ্গীর পাড়া ঘাটে পাগলা নদীর স্বাভাবিক গতি রোধ করে নদীর উপর দিয়েই অবৈধভাবে রাস্তা নির্মাণ করিয়া ট্রাকট্ররে উত্তোলনকৃত মাটি পাশ্ববর্তী বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রয় করিয়া আসিতেছে খাইরুল সিন্ডিকেটের লোকজন । নদীর উপর নির্মিত রাস্তা টি এজন্যই তৈরি করা হয়েছে।

উক্ত সিন্ডিকেটের পিছনে রয়েছে ছোট চক পাড়া গ্রামের মৃত হুসেন আলীর ছেলে বর্তমান ছত্রাজপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওর্য়াডের বিএনপির সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। একই গ্রামের মৃত এরশাদ আলীর ছেলে বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি কাশেম । একই গ্রামের হুমায়ন হাজির ছেলে বিএনপির সদস্য সেরাজুল ও দশ ভাইয়া পাড়া গ্রামের সেরাজুল ইসলামের ছেলে ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক তারিফ মাস্টার সহ নাম না জানা অনেক প্রভাবশালী বিএনপির কর্মীসহ অনান্যরা।

এও জানা যায় যে, পদ্না নদীর বেড়ি বাঁধ সংলগ্ন পদ্মা নদীর কৃষি জমির মাটি সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিদিন ৫ / ৬ টি এক্সকেভেটর মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে প্রায় ৪০০ থেকে ৪৫০ টি ট্রাক্টরে প্রতিনিয়তই মাটি উত্তোলন করে আসিতেছে সিন্ডিকেটের লোকজন । জাহাঙ্গীর পাড়া ঘাটে ট্রাকট্রর প্রতি খাজনা উত্তোলন করা হচ্ছে ২০০ টাকা।

স্থানীয়রা জানান,বেশ কয়েকবছর থেকেই কৃষি জমির মাটি আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ ফিট গর্ত করে এক্সকেভেটর মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে কেটে নেওয়া হচ্ছে । দেখার যেন কেউ নেই। এ যেন এক বিশাল খাল। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ট্রাকট্ররে মাটি পরিবহন অব্যাহত রয়েছে। ট্রাকট্ররে করে মাটি পরিবহনের জন্যই পাগলা নদীর স্বাভাবিক গতি রোধ করে নদীর উপরই রাস্তা তৈরি করেছে তারা। এসব ফসলি জমির মাটি চলে যাচ্ছে পাশ্ববর্তী ইটভাটা গুলোতে। মাটি পরিবহনকারী ট্রাকট্ররগুলোর কারণে ভেঙে যাচ্ছে গ্রামীণ সড়কগুলো। ধুলো-বালির কারণে এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যার কারণে পদ্মা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সড়ক ভাঙ্গন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

প্রতি বছর পদ্না নদী ভাঙনে বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি ও ঘরবাড়ি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে । পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণে কাজ করছেন । দিনের পর দিন এভাবে কৃষি জমির মাটি খনন করার কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে যার ফলে বন্যার সময় নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। মাটি উত্তোলনের ফলে বাঁধ এলাকা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিন্ডিকেটের কয়েকজন প্রতিবেদককে বলেন , ঘাটে টোল বাবদ ট্রাকট্রর প্রতি আদায় করা হচ্ছে ২০০ টাকা। সাধারণ জনগণের কাছ থেকে ঘাট পারাপারের জন্য টাকা আদায় করা হচ্ছে। তারা আরও বলেন, ঘাট থেকে শুরু করে মাটি কাটা পর্যন্ত সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন খায়রুল পুলিশ । বেশ কয়েক বছর থেকেই খাইরুল পুলিশ এই সিন্ডিকেট পরিচালনা করে আসছে। প্রতি ট্রাকট্রর মাটি বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৭০০ টাকার মধ্যে। তাছাড়াও দূরত্ব অনুযায়ী ট্রাকট্রর প্রতি মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে খায়রুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে প্রতিবেদক একাধিক বার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমরা অবগত ছিলাম না, আপনার মাধ্যমেই অবগত হলাম। অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিবেদক শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পায়নি।

ভূমিদস্যুদের ব্যাপারে অবিলম্বে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসীসহ সুশীল সমাজ। অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন বন্ধ না করলে ভবিষ্যৎ কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাবে। যার ফলে ফসল উৎপাদন হবে কম। ভবিষ্যতে তখন খাদ্য সংকটে পড়বে বাংলাদেশ।

পাগলা নদী ও কৃষি জমি ধ্বংস হবার আগেই এর রক্ষা করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন সরকার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এমনটাই আশা করেন জেলার সচেতন মহল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category




error: Content is protected !!
error: Content is protected !!