• মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ১১:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নাচোলে অভ্যন্তরীণ বোরে মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহের উদ্বোধন রহনপুর রেলওয়ে শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা ও সহযোগিতা কামনায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফুলকুঁড়ি স্কুলে অনুষ্ঠিত হলো আন্তঃশ্রেণী বিতর্ক প্রতিযোগিতা – ২০২৪ নাচোলে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠিত মহেশপুরে ড্রাগন চাষী মিলনের ২৬শ’ ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা কোটালীপাড়া জোর পূর্বক ৭০ বিঘা ঘের তৈরি নাচোলে বিশ্ব “মা” দিবস উদযাপন নাচোলে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কে সংবর্ধনা নাচোলে বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু গোমস্তাপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  আশরাফ আলী আলিম নির্বাচিত

ঢাবির সি-ইউনিটে প্রথম হলেন গোপালগঞ্জের জিলহাজ, হতে চান ক্যাডার

Reporter Name / ২৬৯ Time View
Update : শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩

পলাশ সিকদার, গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ


মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করলে মফস্বল থেকেও প্রথম হয়ে বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া যায় উজ্বল দৃষ্টান্ত গোপালগঞ্জের মো. জিলহাজ শেখ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় সি-ইউনিটের মানবিক বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে গোপালগঞ্জের এ শিক্ষার্থী। ভর্তি পরীক্ষার নৈর্ব্যক্তিক ও লিখিত ১০০ নম্বরের মধ্যে সে পেয়েছে ৭৯.২৫ নম্বর। তার এই কৃতিত্বে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সহপাঠিদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। আগামীতে অ্যাডমিন ক্যাডার হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে চান জিলহাজ।

শুক্রবার (৯ জুন) দুপুরে গোপালগঞ্জ শহরতলীর পুরাতন মানিকদাহের বাড়ীতে গিয়ে জানা গেছে, মানিকদাহ গ্রামের ব্যবসায়ী শহর আলী শেখ ও গৃহীনি শিরীন আক্তারের ছেলে মো. জিলহাজ শেখ। ৩ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে জিলহাজ ৩য় ও ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় তার ছিল গভীর আগ্রহ।

পুরাতন মানিকদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাইমারী স্কুলে পড়া শেষ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয় জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ৪.৮৩ পয়েন্ট নিয়ে এসএসসি পাশ করে। পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য শহরের হাজী লাল মিয়া সিটি কলেজে ভর্তি হন জিলহাজ। এ কলেজের মানবিক শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে কৃর্তিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জন্য গোপালগঞ্জ শহরের অপটিমাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন। সেখানের বিভিন্ন গাইড লাইন নিয়ে চলে প্রস্তুতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটের মানবিক বিভাগের ভর্তি পরীক্ষার অংশগ্রহণ করে জিলহাজ শেখ। সেখানে ৭৯.২৫ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে। এছাড়া এসএসসি, এইসএসি ও ভর্তি পরীক্ষার নাম্বার মিলে অর্জন করেন ৯৮.৯১ পয়েন্ট। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।

জিলহাজের এ কৃতিত্বে পুরো পরিবারে চলছে আনন্দের বন্যা। নিজের ইচ্ছামত বিষয় নিয়ে পড়শোনা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশিপাশি মানুষের মত মানুষ হবে দেশের জন্য কাজ করবে প্রত্যাশা পরিবারের সদস্যদের। তার এই সাফল্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লাল মিয়া সিটি কলেজ, অপটিমাম কোচিং সেন্টার, সহপাঠি ও প্রতিবেশীরা আনন্দিত। প্রতিটি ক্লাসে তার উপস্থিতি, অধ্যবসায় ছিল চোখে পড়ার মত।

আল্লাহ তায়ালা, মা-বাবা, ভাই-বোন ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মো. জিলহাজ শেখ বলেন, পরিবারের সবার আমার প্রতি আস্থা ছিল, যা আমাকে শক্তি হিসাবে কাজে দিয়েছে। এই শক্তিই কাজে লাগিয়ে আমি ভাল ফলাফল করেছি। কলেজে উঠেই আমার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করব। সেজন্য আমি কলেজ থেকে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করি। তবে এসএসসিতে ৪.৮৩ পেয়ে আপসেট ছিলাম। এরপরই ভালভাবে পড়াশোনা করি। সেখান থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাই। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতির জন্য গোপালগঞ্জের স্থানীয় কোচিং সেন্টার অপটিমাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হই। সেখান থেকে আমাকে সকল ধরনের সহযোগীতা করে। তবে আমি কখনো ঘণ্টা হিসাবে পড়াশোনা করিনি। রুটিন হিসাবে প্রতিদিনের পড়াশোনা শেষ করেছি। আমার ইচ্ছা লেখাপড়া শেষে অ্যাডমিন ক্যাডার হব। সেখান থেকে দেশের জন্য কাজ করতে চাই।

জুনিয়রদের ঢাকা না যাওয়ার আহবান জানিয়ে মো. জিলহাজ শেখ আরো বলেন, যারা মেধাবী তাদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে ঢাকায় গিয়ে কোচিং করতে হবে এটা ঠিক নয়। মফস্বল শহর থেকে ঢাকায় গিয়ে সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অন্তত ৪ মাস সময় লাগে। এতে প্রস্তুতি নেয়া যায় না। কোচিং করতে ঢাকায় গিয়ে সময় নষ্ট না করে স্থানীয় কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রস্তুতি নিলে ভাল ফলাফল করা সম্ভব।

মো. জিলহাজ শেখের বড় ভাই মিনহাজ শেখ বলেন, আমি আমার ছোট ভাইকে সব সময় পড়ালেখায় সাহায্য করেছি। কিভাবে পড়তে হবে, কি কি বিষয় দেখতে হবে। তার এই রেজাল্টে আমরা খুবই খুশি। আশা করি সেখান থেকে ভাল করে পড়ালেখা শেষ করে দেশের জন্য কাজ করবে।

মো. জিলহাজ শেখের মা শিরীন আক্তার বলেন, ছেলের রেজাল্টে আমি প্রচন্ড খুশি। পড়ালেখার জন্য ওকে কখনো বকা দিতে হয়নি। পড়ালেখা সে নিজের ইচ্ছা মত করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সে তার পড়ালেখা আগের মতই চালিয়ে যাবে। পড়াশোনা শেষ করে মানুষের মত মানুষ হয়ে ফিরে আসবে।

মো. জিলহাজ শেখের বাবা শহর আলী শেখ বলেন, ছোটবেলা থেকে পড়ালেখার প্রতি জিলহাজের আগ্রহ ছিল। কখনো ধমক দিয়ে ওকে পড়াতে বসাতে হয়নি। আমার ছেলের রেজাল্টে আমি খুব খুশি। এখন উচ্চ শিক্ষা শেষ করে পছন্দ মত পেশা বেছে নিয়ে সবার জন্য কাজ করবে এমনটাই আশা করছি।

হাজী লাল মিয়া সিটি কলেজের অধ্যক্ষ পলাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, নিয়ম ও নৈতিকতার মাধ্যমে লেখাপড়া করলে সাফল্য পাওয়া সম্ভব তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মো. জিলহাজ শেখ। কলেজে পড়ার সময় ওর মেধা, ইচ্ছা শক্তি ছিল প্রবল। আমরা শিক্ষকরা ওকে সব সময় গাইড করেছি। পরীক্ষায় সে ভাল ফলাফল করেছে। ওর এই ফলাফলে আমরা শিক্ষকরা খুবই আনন্দিত।

এম.এস.হোসেন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category




error: Content is protected !!
error: Content is protected !!