আজ ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ খ্রিঃ তারিখ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পুলিশ অফিস সম্মেলন কক্ষে জেলার পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলের শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা প্রদান করেন জনাব সরকার মোহাম্মদ কায়সার, পুলিশ সুপার, ভোলা।
পুলিশ সুপার মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের অবদানের কথা উল্লেখ বলেন বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল সময় হল ১৯৭১ সাল। মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল, বেশ কয়েকজন এসপি সহ প্রায় সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্য বাঙ্গালীর মুক্তির সংগ্রামে জীবনদান করেন। ১৯৭১ সালের মার্চ মাস হতেই প্রদেশের পুলিশ বাহিনীর উপর কর্তৃত্ব হারিয়েছিল পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার। পুলিশের বীর সদস্যরা প্রকাশ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তারা ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ ঢাকার রাজারবাগের পুলিশ লাইন্সে ২য় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত বাতিল .৩০৩ রাইফেল দিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা। এই সশস্ত্র প্রতিরোধটিই বাঙ্গালীদের কাছে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরুর বার্তা পৌছে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশের এই সদস্যরা ৯ মাস জুড়ে দেশব্যাপী গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন এবং পাকিস্তানী সেনাদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে বলেন ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে তৎকালিন অধ্যাপক, সাংবাদিক, শিল্পী, প্রকৌশলী, লেখক-সহ চিহ্নিত বুদ্ধিজীবীদের পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসরেরা জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেদিন প্রায় কয়েক শতাধিক বুদ্ধিজীবীদের তাদের বাসা হতে ধরে নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের উপর বীভৎস নির্যাতন চালানো হয় এবং পরে তাদের নৃশংসভাবে রায়েরবাজার ও মিরপুর বধ্যভূমিতে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়। পুলিশ সুপার এই নৃশংস হত্যাকান্ডের তিব্র নিন্দা জানান। পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরত কামনা করে পুলিশ লাইন্স মসজিদে যোহর বাদ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), মোঃ মহসিন আল ফারুক, ভোলা জেলার পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাগন সহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।