শিল্পাঞ্চল পুলিশের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গত ৩০ অক্টোবর, ২০২১ খ্রিঃ তারিখে শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১, আশুলিয়া, ঢাকার পুলিশ লাইন্সে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান, এমপি মহোদয় প্রধান অতিথি এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ন, এমপি মহোদয়; দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান, এমপি মহোদয়; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন মহোদয় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব হিসেবে করেন ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ মহোদয়।
শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিঃ আইজিপি জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয় তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সুদক্ষ ও বলিষ্ট নেতৃত্বে এবং দূরদর্শী ও সৃজনশীল পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসবে বিশ্বের দরবারে পরিচিতি করেছেন। দেশের জনগণকে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মেগা প্রকল্প গ্রহণ, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন। বর্তমানে শিল্প খাতের হাত ধরে বাংলাদেশ অর্থনীতির প্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় সামিল হয়েছে এবং এক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ নিয়ামক হিসেবে তিনি শিল্পাঞ্চল পুলিশের অবদান উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিল্পাঞ্চল পুলিশ শৃঙ্খলা-নিরাপত্তায় শ্রমবান্ধব পুলিশিং এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে এবং প্রযুক্তি নির্ভর পুলিশিংয়ের মাধ্যমে শিল্পাঞ্চলে বিনিয়োগবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা লক্ষ্যে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মহোদয় বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে শিল্পাঞ্চল পুলিশ বাংলাদেশের শিল্প খাত তথা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখেছে তা আসলেই সকলের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়।
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয় বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিল্পাঞ্চল পুলিশ শিল্প খাতে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রেখেছে, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করেছে। ফলে শিল্প সেক্টরে স্থিতিশীল অবস্থা বিদ্যমান রয়েছে বিধায় দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে, কর্মসংস্থান হয়েছে দেশের জনগণের, উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে, রপ্তানি আয় ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে, এ খাতের সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য শিল্পাঞ্চল পুলিশের সৃষ্টি। মহামারী করোনকালীন সময়ে দেশের অর্থনীতির সচল চাকা রাখতে সরকার ঘোষিত সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শিল্পাঞ্চল পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ মহোদয় বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এই অঞ্চলের ইকোনমিক পাওয়ার হাউজ হতে চাই। শিল্পাঞ্চল পুলিশ প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছিল। কিছু স্বার্থানেষী মহল দেশের অর্থনীতি উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বদা তৎপর। এদের মোকাবেলা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৮ কোটি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচক রপ্তানি আয়, মাথাপিছু আয়, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ইত্যাদির বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে অর্থনীতির অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় সামিল হয়েছে, যার প্রত্যক্ষ নিয়ামক হিসেবে রয়েছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ। শিল্পাঞ্চল পুলিশ মালিক-শ্রমিকদের মাঝে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে শিল্প সহায়ক পরিবেশ ও শিল্পাঞ্চলে স্থিতিশীল অবস্থা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশব্যাপী অবস্থিত শিল্পাঞ্চল সমূহে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য, পুলিশের সম্প্রসারণ, জনবল বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় সকল ধরণের লজিস্টিক সাপোর্ট নিশ্চিত করার জন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি কামনা করেন। তিনি দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য শিল্পাঞ্চল পুলিশের সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জানান এবং আরো উদ্যমী হয়ে দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান, এমপি মহোদয় বলেন, বাংলাদেশের গামেন্টস্ সেক্টরে সৃষ্ট শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন করার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিল্পাঞ্চল পুলিশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। মালিক-শ্রমিকের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেছে, ফলে এ সেক্টরে স্থিতিশীল অবস্থা নিশ্চিত করেছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ। বর্তমান সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য ১০ মেগা প্রকল্প গ্রহণ, ৯৭ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এগুলোর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে শিল্পাঞ্চলসমূহের আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিল্পাঞ্চল পুলিশের ইউনিটের সম্প্রসারণ, জনবল বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় সকল লজিস্টিক সাপোর্ট নিশ্চিত করে এ ইউনিটকে আরো আধুনিকায়ন করবেন বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি এ ইউনিটের উত্তরোত্তর সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
এছাড়াও সভায় বিজেএমইএ -এর সভাপতি ও বিকেএমইএ-এর নির্বাহী পরিচালক বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং শ্রমিক প্রতিনিধি হিসেবে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন । উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সসহ বিভিন্ন ইউনিটের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিজেএমইএ ও বিকেএমইএ-এর নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ীবৃন্দ, শিল্প কারখানার মালিক ও প্রতিনিধিবৃন্দ, শ্রমিক প্রতিনিধি ও শ্রমিক সংঘঠনের নেতৃবৃন্দ, শিল্পাঞ্চল পুলিশের সকল জোনের পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।