নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, আমরা সব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নই। কিন্তু যারা অনিয়ম করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ। কোনো ব্যবসায়ী সংগঠন তাদের পক্ষ নেবেনা। ব্যবসায়ীরা যদি আজ আমাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দেন তারা নিয়ম মেনে ব্যবসা করবেন, কাল থেকে আমরা বাজারে অভিযানে যাব না। সভায় ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক বলেন, সুযোগ পেলেই বাজারে অস্থিরতা তৈরি করা হয়। যারা অস্থিরতা করে, এর দায়িত্ব নিতে হবে।। অনিয়ম করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবার যুদ্ধ চলবে। তিনি বলেন, আমাদের সবার যুদ্ধ তাদের বিরুদ্ধে যারা তিন টাকার লেবু একই মার্কেটে আট টাকায় বিক্রি করে। তেল মিল । গেট থেকে ক্রয় করার পর প্রতিটি পর্যায়ে যারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে। ভোক্তারা যাতে স্বস্তিতে থাকে, সেজন্য আমাদের যা যা করার তা করব। গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স সেন্টারে দি চিটাগাং চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণবিষয়ক মতবিনিময় সভায় সফিকুজ্জামান এসব কথা বলেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি, উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশ্যে রিয়েল টাইম অ্যাপস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সফিকুজ্জামান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশ্যে সকল পর্যায়ে কঠোর মনিটরিং করা হচ্ছে। মিল পর্যায়ে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। ভোক্তা যাতে স্বস্তিতে থাকেন, সে জন্য যা করা দরকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাই করবে।
চট্টগ্রাম বন্দর এবং খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার যদি স্বাভাবিক কাজ করে, তাহলে পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয় উল্লেখ করে সফিকুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা সারা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে সহযোগিতার জন্যই প্রমথ।
কাজ করে, ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে। চলমান বিশ্ব বাণিজ্যে অস্থির পরিস্থিতিতেও সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। দেশে পর্যাপ্ত পণ্য মজুদ থাকার পরও সরবরাহে ঘাটতি বা মূল্য বৃদ্ধি হওয়ার কথা নয়। সরকার ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কোনো পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক ওঠানামা করলে সেটা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ক্ষতির কাণ হতে পারে। ব্যবসায়ীরা নিজেরাই পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখলে বাজার মনিটরিংয়ের প্রয়োজন হয় না। তাই ব্যবসায়ীদের কাউকে
আলোচনা সভায় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বলেন, পাণ্যের সরবরাহ, মজুদ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে মিলার হতে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সাপ্লাই চেইন নির্বিঘ্ন রাখা, বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখা, প্রত্যেক দোকানে ক্রয় বিক্রয়ের মূল্য তালিকা প্রদর্শন, পণ্য পরিবহনকে বাধামুক্ত রাখা, চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে ১৩ টিন ওজনের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি গেলে শুষ্ক সমন্বয় করা. ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেলে তা সমন্বয় করা, ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) ইস্যুর ক্ষেত্রে জটিলতা দুর করা, এইচএস কোর্ড কোনো কারণে ভুল হলে উচ্চহারে জরিমানা না করে তা সংশোধনের সুযোগ দেওয়া, আমদানি, মিলার, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যৌক্তিকভাবে লভ্যাংশ নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সঠিক সময়ে পণ্য বাজারে এলে কোনো সমস্যা হবে না।
দিচিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন চিটাগাং চেম্বারের নেতৃবৃন্দ, চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, আমদানিকারক, মিলালিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ, দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আকতার হোসেন, খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ ছগির আহমেদ, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ চট্টগ্রাম পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
তথ্যসূত্র :দেশ রুপান্তর