যশোরে প্রকাশ্য ছুরিকাঘাতে তৃতীয় লীঙ্গের এক ব্যক্তি খুন
সেলিম আহম্মেদ,যশোর প্রতিনিধিঃ
যশোরে প্রকাশ্য ছুরিকাঘাতে তৃতীয় লীঙ্গের এক ব্যক্তি খুন হয়েছে। শনিবার সকালে শহরতলীর হালসা নারাঙ্গালী ব্রীজের কাছে রাস্তার উপর এঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম লাভলী হিজড়া (৩০)। সে বেজপাড়া চিরুনিকল এলাকার মৃত আব্দুল করিম বিশ্বাসের মেয়ে ও ধর্মতলা মোড়ের ফারুক হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
জানা গেছে, শনিবার সকাল ৮টার দিকে লাভলী হিজড়া তার অপর দুই সহযোগি হিজড়া সেলিনা ও নাজমার সাথে ধর্মতলা মোড় থেকে অটোরিক্সা যোগে কায়েমকোলা গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। হালসা নারাঙ্গালী ব্রীজের কাছে মাঠের মধ্যে পৌছালে আগে থেকে রাস্তার উপর ওৎ পেতে থাকা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাদের গাড়ি থামিয়ে দেয় এবং অজ্ঞাত কারণে লাভলীকে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। এসময় তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। এর কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী লাভলীর সহযোগি নাজমা ও সেলিনা জানান, লাভলী, নাজমা ও সেলিনা এক সাথে যশোর শহরের ধর্মতলায় ফারুক হোসেনের বাড়িতে হিজড়া সরদার পান্জারির অধীনে ছিলেন। কিন্তু তাদের মতের মিল না হওয়ায় সম্প্রতি তারা তিনজন পান্জারির থেকে আলাদা হয়ে যান। এনিয়ে পান্জারি ও তার অনুসারী মুন্নি, বর্ষা ও সোনিয়া প্রায়ই সময় তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল।
শনিবার সকালে তারা তিনজন গ্রামে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ধর্মতলা মোড় থেকে অটোরিক্সা যোগে কায়েমকোলা গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। তারা হালসা নারাঙ্গালী ব্রীজের কাছে পেঁৗছালে মুখে মাস্ক পরা দুইজন এসেই লাভলীর গলায় ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকে। এসময় লাভলী রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় লাভলীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার আহম্মেদ তারেক শামস বলেন, গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয় এবং দ্রুত তাকে অপারেশন থিয়েটারে পাঠানো হয়। কিন্তু অপারেশনের টেবিলে তিনি মারা যান। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানান।
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যাকান্ডের কারণ উদঘাটন করা যায়নি। পুলিশ লাভলীর দুই সহযোগিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি অফিসে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কি কারণে কেনো এই হত্যাকাণ্ড এবং কারা ঘটিয়েছে পুলিশ তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।