আফরুজা খাতুন, তিনি পেশায় একজন আয়া, কাজ করেন দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সন্তানের বয়স যখন দুবছর তখনই হারিয়েছেন স্বামীকে। ছেলেকে ৬ বছর, অর্থাৎ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির আগ পর্যন্ত তার সাথেই রেখেছিলেন। কিন্তু প্রাথমিকে ভর্তি করানো হয় ছেলের নানার বাড়ি চিরিরবন্দর আউলিয়াপুকুরের ভাদেরা গ্রামের একটি বিদ্যালয়ে। তখন থেকেই নানার বাসাতেই বড় হয় তার ছেলে হৃদয় বাবু। মা আফরুজা খাতুন মেডিকেলে আয়ার কাজ করায় মাসের কিছুদিন বাবার বাড়িতে ও কিছুদিন স্বামীর বাড়ি সদর উপজেলার রাজারামপুর গ্রামে কাটান।
ছেলে হৃদয় বাবুর বয়স এখন ১৫ বছর। পড়োশোনা করে চিরিরবন্দর উপজেলার আতার বাজারের আছিয়া নাজির রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের ৭ম শ্রেনীতে। আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকাল সাড়ে ১০ টায় নানা মজিবর রহমানের বাসার পাশেই ভাদেড়া জামতলী সংলগ্ন রেললাইনে বসে মোবাইল গেম ফ্রি-ফায়ার খেলছিলো কানে হেডফোন লাগিয়ে। বেলা ১১ টায় চিরিরবন্দরের দিক থেকে আসা পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই একাধিকবার হর্ন দেওয়ার পরেও কানে হেডফোন থাকায় শুনতে পায়নি হৃদয় বাবু। আশেপাশেও ছিলোনা কেউই। ট্রেনটি কাছে আসার পর বুঝতে পারে সে এবং পালানোর চেষ্টা বৃথা হয় তার। ধাক্কা লাগে ট্রেনের ইঞ্জিনের সাথে। শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায় দান কাধের মাংস। ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে হৃদয় বাবু।
এঘটনায় শোক নেমেছে গোটা এলাকায়।