দীর্ঘ তিন বছর পর প্রতিবেশি কাতারের সাথে স্থলসীমান্ত খুলে দিলো সৌদি আরব। শিগগিরই যোগাযোগ পুনঃস্থাপন হবে সমুদ্র আর আকাশসীমাতেও। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সোমবার এ ঘোষণা দেয় কুয়েত। কাতারের আমির এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে কথা বলেছেন, কুয়েতের আমির। আঞ্চলিক ঐক্যের স্বার্থে ভ্রাতৃত্ব অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে সম্মত হয়েছেন তিন নেতা।
সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ এনে ২০১৭ সালে, কাতারের সাথে সর্ম্পক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন আর মিসর। উপসাগরীয় যুদ্ধের পর আরব বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক সংকট হিসেবে দেখা হচ্ছিল একে। সাড়ে ৩ বছর পর কুয়েতের মধ্যস্থতায় রাজনৈতিক সমাধানের পথে রিয়াদ-দোহা।
কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আহমেদ নাসের আল-মোহাম্মদ আল-সাবাহ বলেন, “কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল-আহমেদ আল-সাবাহ’র পরামর্শে কাতারের সাথে স্থল ও সমুদ্র সীমান্ত খুলে দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে সৌদি আরব। আজ রাতেই কার্যকর হচ্ছে এ ব্যবস্থা।”
মূলত আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সহযোগী বলে দোহার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল রিয়াদ। যার ধারাবাহিকতায়, প্রতিবেশীদের কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে কাতার। অবরোধ আরোপ করা হয় দেশটির স্থল, সমুদ্র ও আকাশসীমায়। সমঝোতার ফলে এরই মধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে স্থলসীমান্ত।
কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল-মুরাইখি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়া রাষ্ট্রগুলোর যতো অভিযোগ, তার কোনোটিই সত্যি নয়। নিজেদের দাবির স্বপক্ষে, দোহার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতায় সহযোগিতা বা পৃষ্ঠপোষকতার কোনো প্রমাণ এতোদিনে তারা দিতে পারেনি। তাই প্রতিবেশি দেশগুলোর কাতার বর্জন কর্মসূচি এমনিই অমূলক ছিল।”
আরব লিগে নিযুক্ত সৌদি দূত আহমেদ আল-কাত্তান বলেন, “সৌদি আরবের স্বার্থেই নাকি ইরানের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল কাতার। সৌদি আরবের কারো সাহায্যের দরকার নেই। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের যেকোনো অপচেষ্টা রুখে দেয়ার সক্ষমতা আল্লাহ’র ইচ্ছায় আমাদের আছে। তিনি চাইলে নিজেদের কর্মকাণ্ডের ফল ইরানকে শিগগিরই ভোগ করতে হবে।”
শুরুতে সংকট সমাধানে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বন্ধ করে দেয়া থেকে শুরু করে তুরস্কের মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে সম্পর্কচ্ছিন্ন এবং ইরানের সাথে কূটনীতির পরিসর কমিয়ে আনতে শর্ত বেঁধে দিয়েছিল রিয়াদ। বরাবরই সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সব শর্তও নাকচ করেছে দোহা। এ অবস্থায় কিসের ভিত্তিতে এলো সমঝোতা, তা এখনও স্পষ্ট করেনি কোনো পক্ষ।