ফলোআপ-
সাংবাদিকদের হুমকি
শিবগঞ্জ(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি
চলতি অর্থ বছরে শিবগঞ্জে গম সংগ্রহে কৃষককে বঞ্চিত করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনিয়ম ও দূর্নীতি করে কেনা হচ্ছে ভারতীয় গম। এমন সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় সাংবাদিকদের একদিকে হুমকি অন্যদদিকে প্রভাবশালীদের তদবীর অব্যহত রয়েছে। তবে এসব অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত অর্থ বছরে গম সংগ্রহে অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় গম সংগ্রহ করা বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে গত অর্থ বছরের টাকা ফেরত চলে যাই।
এছাড়াও ২০১৭ সালে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জান মোহাম্মদ এর বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে তাঁকে ওএসডি করে জরুরি ভিত্তিতে বদলী করা হয়।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরাসরি গোডাউনে গম সংগ্রহ না করে কৃষকদের বাদ দিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাদ্য গুদামে গম সংগ্রহ করা অব্যহত রয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে যে, সংগ্রহীত গম ভারত থেকে সোনামসজিদ স্থল বন্দর দিয়ে ও ঠাকুরগাঁও থেকে আমদানি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন এলাকার বড় বড় গম ব্যবসায়ী ও পাইকারদের কাছ থেকে সরকারী ভাবে গম নেওয়া হচ্ছে বলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য যে, তারা তাদের মনোনীত কৃষকদের নামে গম সংগ্রহের ভাউচার তৈরি করছে বলে জানা গেছে এবং তাদের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর শিবগঞ্জ উপজেলার ৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে এবছর ৪২ হাজার মেট্রিক টন গম উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু সেই উৎপাদিত গম সংগ্রহ না করেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গম কেনা হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল ইসলাম গম সংগ্রহের কৃষকদের তালিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, উপজেলা গম সংগ্রহের কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবের অনুমতি ছাড়া কৃষকদের তালিকা দেয়া যাবে না।
উপজেলা খাদ্যগুদামের এলএসডি গোলাম রসুল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০ মে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫’শ ৪৮ মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করা হয়েছে। সুত্রমতে শুক্র ও শনিবার গম সংগ্রহপী বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তথ্য দিতে অস্বীকার করেন।
তবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জান মোহাম্মদ জানান, গত শুক্রবার পর্যন্ত ১৬’শ ৫০ মেট্রিক গম সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি সিন্ডিকেটের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে দেশীয় গম সংগ্রহ করছি। সাংবাদিকদের হুমকি দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাংবাদিকদেরকে হুমকিদাতা এন্তাজ আলীকে আমি চিনি জানি না।
এব্যাপারে খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো সাকিব আল রাব্বী জানান, ভারত থেকে গম আনার তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তিনি আরো বলেন, শুধু কৃষকদের তালিকায় নয়, কৃষি বিভাগের যে কোনো তথ্য মিডিয়াকর্মীকে দেয়া উপজেলা কৃষি অফিসারের দায়িত্ব। সিন্ডিকেটের মুলহোতা এন্তাজ আলী মিডিয়াকর্মীদের হুমকি দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
উল্লেখ, সরকারীভাবে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ২৯’শ ৯ মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করা হবে।