গোদাগাড়ী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খেতুরীধামে হিন্দু ধর্মালম্বীদের মহোৎসবের দ্বিতীয় দিন চলছে।
নয়ন ঘোষ
সোমবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ঠাকুর নরোত্তম দাসের তিরোভাব তিথি মহোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
অরুণোদয় থেকে অষ্ট প্রহরব্যাপী চলবে সেখানে তারক ব্রহ্মনাম সংকীর্ত্তন। সোমবার ( ২৫অক্টোবর) প্রথম প্রহরে দধিমঙ্গল, দ্বি-প্রহরে ভোগ আরতি ও মহান্ত বিদায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩ দিনব্যাপী এ মহোৎসব।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুর গ্রামে অবস্থিত এ ধাম প্রতি বছরের মতো এবারও ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। খেতুরীধামের এ উৎসবকে ঘিরে প্রতি বছর দুই বাংলার ভক্তদের ভিড়ে গৌরাঙ্গবাড়ী মন্দির ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে এখন জনস্রোত তৈরি হয়েছে।
বলা হয়ে থাকে, বাংলাদেশ হিন্দু ধর্মালম্বীদের এটিই সবচেয়ে বড় জমায়েত। উৎসব সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে খেতুরীধাম ট্রাস্টিবোর্ড ও উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কামরুল ইসলাম
জানান, এবারের উৎসবকে ঘিরে পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
খেতুরীধামের উৎসব ও মেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেখানে তিন স্তরে ৩শ পাঁচজন পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। দু’টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়া র্যাব, ডিবি পুলিশ ও আনসার সদস্য নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
গৌরাঙ্গদেব ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপদ স্যান্যাল জানান, পৃথিবীতে হিন্দু ধর্মাবলাম্বীদের মোট ছয়টি ধাম রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটিই ভারতবর্ষে। আর একটি মাত্র বাংলাদেশে। আর তা এ খেতুরীধাম। এ কারণে প্রতিবছর উৎসবকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন জেলাসহ ভারত, নেপাল ও মায়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েক লাখ ভক্তের সমাগম ঘটে খেতুরীধামে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
গৌরাঙ্গবাড়ী মন্দিরের ব্যবস্থাপক গোবিন্দ চন্দ্র পাল জানান, সুন্দর পরিবেশে উৎসব শেষ করতে এবার ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কয়েক লাখ নারী-পুরুষের জন্য প্রয়োজনীয় প্রসাদ, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে প্রেমতলী বাজার থেকে খেতুরীধাম পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সংযোগ সড়কটিতে আলোকসজ্জারও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।