• সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
আজ শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস নাচোলে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল নাচোল ইলা মিত্র প্রেসক্লাবের আত্মপ্রকাশ,সভাপতি সোহেল রানা – সম্পাদক বিশ্বনাথ চাঁপাইনবাবগঞ্জ উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বুলবুলের উদ্যোগে (৩৪) কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ের সূচনা চাঁপাইনবাবগঞ্জে “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও উচ্চশিক্ষা এবং ক্যারিয়ার পরিকল্পনা” সেমিনার অনুষ্ঠিত নাচোলে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি পালন চাঁপাইনবাবগঞ্জে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি নাচোলে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে ইউএনও’র মতবিনিময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহানন্দা ব্যাটালিয়নের ১০ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন জঙ্গলবাড়ী চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির বিদায়ী আয়োজন

ছেলেদের অবহেলায় বাড়ি ছেড়ে ৬ মাস রাজশাহীর রাস্তায় বৃদ্ধ

Reporter Name / ৪৭৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২১

মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল রাজশাহী
দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক ৭৫ বছর বয়সী আবদুস সালাম। কিন্তু তার প্রতি খেয়াল নেই ছেলেমেয়েদের। দু-বেলা দুমুঠো খাবারও জোটেনি। কিন্তু বউদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ঠিকই জুটেছে। আর এই কষ্ট বুকে চেপে ছয় মাস আগে বাড়ি ছেড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার আফতাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আবদুস সালাম।এই ছয় মাস রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ভবঘুরে জীবনযাপন করছেন সালাম। তীব্র শীতের মধ্যেও খোলা আকাশের নিচে কাটছে তার রাত। নেই খাবারের সংস্থান। পথচারীদের অনুগ্রহ নিয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছেন তিনি।আজ বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে শুয়ে ছিলেন আবদুস সালাম। ময়লার আস্তরণ জমেছে গায়ে। ভনভন করছে মাছি। কাশছেন মাঝে মাঝেই। পথচারীদের কারো নজর নেই সেদিকে।জানতে চাইলে ক্ষীণকণ্ঠে আবদুস সালাম জানান, দুই দিন ধরে তিনি কারো সাহায্য পাননি। এই দুই দিন তার পেতে খাবারও জোটেনি। শীতের ভেতর খোলা আকাশের নিচে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।কী খেতে চান-জানতে চাইলে বৃদ্ধ জানান, কলা-পাউরুটি। ভাত খেতে তার সদস্যা হচ্ছে। হাতে রুটি আর কলা পেয়ে শোয়া থেকে উঠে বসেন বৃদ্ধ। হাসিমুখেই গ্রহণ করেন খাবার। এরপর শোনান তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অমানবিক ঘটনার বিবরণ।আবদুস সালাম জানান, তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে বিপুল ফুলবাড়ি বাজারের কসমেটিক্স দোকান চালান। ছোট ছেলে বিপ্লব একই বাজারে চালান ওষুধের দোকান। কিন্তু আফসোস, আজ তার অসুখে ওষুধ নেই। খাবার নেই।বৃদ্ধ আরও জানান, দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তারাও স্বামী-সংসার নিয়ে সুখেই আছেন। ছেলেদেরও আলাদা সংসার। তাদের সংসারে কেবল ঠাঁই নেই এই বৃদ্ধ মানুষটির।আবদুস সালাম অতীত স্মৃতি হাঁতড়ে ফেরেন। জানান, চার ছেলেমেয়ে ও স্ত্রী লাইলা বেগমকে নিয়ে তারও ছিল সুখের সংসার। এলাকায় মুদিখানার দোকান ছিল। বিভিন্ন কৃষিপণ্য কেনাবেচাও করতেন।ঢাকায় ছিল তার তালুর ভেতর। রাজশাহীতেও ব্যবসা করেছেন। যাতায়াত ছিল নিয়মিতই। পৈত্রিক সূত্রে কেবল পেয়েছিলেন বসতভিটাটুকু। ব্যবসার আয় থেকে পরে চার বিঘা ধানিজমিও কেনেন। এই জমি এখনো তার নামেই। কিন্তু ফসল ভোগ করতে পারেন না।বছর দশেক আগেই স্ত্রী লাইলা বেগম মারা গেছেন। এরপর থেকেই তার ওপর বাড়তে থাকে সন্তানদের অবহেলা। এক পর্যায়ে তা চরমে পৌঁছায়। দিনে এক বেলাও খাবার জুটতো না তার। কথায় কথায় খোঁটা দিতেন ছেলের বউরা।এ সবকিছুই তিনি নিয়তি মেনে নিয়েছেন। কষ্ট-অভিমান বুকে চেপে সবার অজান্তে ছয় মাস আগে বাড়ি ছাড়েন। ওঠেন রাজশাহীগামী ট্রেনে। সেই থেকেই তিনি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায়।ছেলেদের সংসারে আর ফিরতে চান না জানিয়ে আবদুস সালাম বললেন, তারা মানুষ না। তাদের কাছে গিয়ে কী লাভ? আর কদিন রাজশাহীতে থাকবেন। তারপর হয়তো অন্য কোথাও চলে যাবেন। আল্লাহই তার দিন পার করবেন। এ নিয়ে তার কোনো আক্ষেপ নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category