করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশে টিকা কার্যক্রমের শুরুর দিনে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টিকা নেবেন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের চাপে নয় বরং সম্পূর্ণ নিজের আগ্রহে তিনি এ টিকা নিচ্ছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমনটি বলেন।
কস্তা বলেন, বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে অনেক দেশ টিকা না পেলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য করোনার টিকার ব্যবস্থা করেছেন। উনি দেশে টিকা আনতে পেরেছেন। এটা আমাদের জন্য গর্বের। প্রথম টিকা নেব— এটিও আমাকে আপ্লুত করছে।’
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কোনো ভয় পাচ্ছেন কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক ওষুধেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। করোনার টিকা তৈরি করা হয়েছে একটা ভালো উদ্দেশ্যে। এখন কার বডিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে, সেটা তো আর কেউ আগে থেকে বলতে পারবে না। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ভয় পেলে কেউ-ই এ টিকা নেবে না।’
‘তবে, কার বডিতে এটা কাজ করবে এবং কার বডিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে, সেটা অন্য হিসাব’— যোগ করেন তিনি।
রুনু বেরুনিকা কস্তা ২০১৩ সাল থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। এর আগে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে কাজ করেন। মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নার্সিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নেন। তিনি দুই সন্তানের জননী এবং তার স্বামী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী।
প্রসঙ্গত, আগামীকাল বুধবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রথমে রুনু বেরুনিকা কস্তাসহ তিনজন নার্স ও তিনজন চিকিৎসকের শরীরে টিকা প্রয়োগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে শুরু হবে কোভিড-১৯-এর টিকাদান প্রক্রিয়া। এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় করোনার টিকাদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জামিল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুর্মিটোলা হাসপাতালের এক নার্স জানান প্রথমে টিকা নেবেন ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। তার পরে টিকা নেবেন ফিমেল মেডিসিন ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স মুন্নি খাতুন ও একই ইউনিটে নার্স রিনা সরকার।
তিনি আরও জানান, চিকিৎসকদের মধ্যে টিকা নেওয়ার তালিকায় প্রথমে রয়েছেন কুর্মিটোলা হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. লুৎফর কবির মবিন ও ডা. শাহরিয়ার আলম।