• সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
আজ শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস নাচোলে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল নাচোল ইলা মিত্র প্রেসক্লাবের আত্মপ্রকাশ,সভাপতি সোহেল রানা – সম্পাদক বিশ্বনাথ চাঁপাইনবাবগঞ্জ উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বুলবুলের উদ্যোগে (৩৪) কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ের সূচনা চাঁপাইনবাবগঞ্জে “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও উচ্চশিক্ষা এবং ক্যারিয়ার পরিকল্পনা” সেমিনার অনুষ্ঠিত নাচোলে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি পালন চাঁপাইনবাবগঞ্জে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি নাচোলে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে ইউএনও’র মতবিনিময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহানন্দা ব্যাটালিয়নের ১০ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন জঙ্গলবাড়ী চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির বিদায়ী আয়োজন

আজ শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস

Reporter Name / ৭৩ Time View
Update : শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

মোঃ শাহিন আহমেদ:
আজ শ্রীমঙ্গলের মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর সূচিত অসহযোগ আন্দোলন শ্রীমঙ্গলে তীব্র রূপ নেয়। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা। তবে এর আগে এই অঞ্চলে দখলদার বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছেন বহু বীর মুক্তিযোদ্ধা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের বরাতে জানা যায়, ৩০ এপ্রিলের পর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি হানাদাররা শ্রীমঙ্গলে অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধাসহ অসংখ্য নারী-পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। অফিস-আদালত ও চা শিল্পে নেমে আসে অচলাবস্থা।

শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগান এলাকায় অবস্থিত ফিনলে টি কোম্পানির বধ্যভূমিতে একসঙ্গে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় ৪৭ জন নিরীহ চা শ্রমিককে। সেই স্মৃতিচিহ্ন আজও বহন করছে কলেজ সড়কে নির্মিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিসৌধ।

এ ছাড়াও শ্রীমঙ্গল পৌর এলাকার হবিগঞ্জ রোডের ওয়াপদার অফিসের পেছনের ছড়া, এবং বর্তমান বিজিবি সেক্টরের সাধু বাবার বটতলা—যার বর্তমান নাম বধ্যভূমি-৭১—এসব স্থানে সংঘটিত হয়েছিল ভয়াবহ গণহত্যা। এখানে শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা নিকুঞ্জ সেন, সমীর সোম, অর্জুন দাসসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা।

শ্রীমঙ্গলে প্রথম শহীদ হওয়া মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন মুকিত লস্কর। এরপর একে একে শহীদ আনিস মিয়া (রিকশাচালক), ছাত্রলীগ নেতা শহীদ মইনউদ্দিন, শহীদ শম্ভু ভূমিজ, শহীদ সমীর সোম, শহীদ আব্দুস শহীদ, শহীদ সুখময় পাল, শহীদ সুদর্শন, শহীদ আলতাফুর রহমানসহ আরও অনেকে প্রাণ বিসর্জন দেন।

পাকবাহিনী পালানোর আগ মুহূর্তে তাদের শেষ নির্যাতনের শিকার হন চা শ্রমিক নেতা ও চা শ্রমিক সমাজের প্রথম গ্র্যাজুয়েট পবন কুমার তাঁতী। তাঁকে হত্যা করে ওয়াপদার পাশে ভুরভুরিয়া ছড়ায় ফেলে যায় হানাদাররা।

মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ও ভারতের সীমান্ত ঘেঁষে মুক্তিবাহিনীর অগ্রযাত্রার খবর ছড়িয়ে পড়লে হানাদার বাহিনী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। অবশেষে ৬ ডিসেম্বর ভোরে তারা শ্রীমঙ্গল ত্যাগ করে মৌলভীবাজারে আশ্রয় নেয়। মুক্ত হয় শ্রীমঙ্গল, উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

চা বাগানের সবুজে ঘেরা এই অঞ্চলের বধ্যভূমি-৭১ আজ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটকের আকর্ষণ, যেখানে তারা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে থমকে দাঁড়ান। শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ১০ ডিসেম্বর বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন সাধু বাবার থলীতে প্রতিষ্ঠিত করা হয় ‘বধ্যভূমি-৭১’ স্মৃতিস্তম্ভ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category