• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
কোটালীপাড়া বজ্রপাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত গোমস্তাপুরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধার দাফন সম্পন্ন ঝিনাইদ সীমান্ত থেকে ৩ কোটি টাকা মূল্যের ৩ পিস স্বর্ণের বারসহ আপন দুই ভাইকে আটক করেছে ৫৮ বিজিবি নাচোল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাবু পুলিশের হাতে গ্রেফতার! গোদাগাড়ীতে পদ্মা নদীতে গোসল করতে গিয়ে দুই ছাত্রের মৃ’ত্যু গোপালগঞ্জে আইনগত সহায়তা দিবস ২০২৪ পালিত নাচোলে জাতীয় আইন গত সহায়তা দিবস-২৪ পালিত গোমস্তাপুরে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায় এসির তার চুরির ৩ ঘন্টার মধ্যে চোরকে আটক করে মালামাল উদ্ধার করল পুলিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস পালিত

ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসায় প্রতিরোধে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট’দের গুরুত্ব ও অবদান

Reporter Name / ৪৭৫ Time View
Update : বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১

বর্তমানে সময়ে করোনার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় ২১৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে পাঁচ হাজার ১৯২ জনে।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্লাটিলেট এর পরিমাণ দ্রুত কমে যায়, যার ফলে রোগীর শরীরের ভিতরে এবং বাহিরে ব্লিডিং শুরু হয়। রোগীর মৃত্যুর মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে। আর এই ডেঙ্গু সহ সকল রোগ নির্ণয় ও প্রতিরোধ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অতপ্রতোভাবে জরিত।

ডেঙ্গু শনাক্ত/নির্ণয়ে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট’দের অবদান:-

ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত করার জন্য-

1. Complete Blood Count
2. Platelet count
3. Dengue for NS1
4. Dengue for IgG
5. Dengue for IgM

এই পরীক্ষানিরীক্ষা গুলো নির্ভুলভাবে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট’রাই করে রিপোর্ট প্রদান করে থাকে।
(কোন ডাক্তার নার্স পরীক্ষানিরীক্ষা করে না)।

ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা/প্রতিরোধে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট’দের অবদান:

ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীদের প্লাটিলেট স্বাভাবিকভাবে কমে যায়, অনেক সময় ৫০ হাজার পার কিউবিক মিলিলিটার এর নিচে নেমে গেলে শরীরের বিভিন্ন অংশ দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়।এমনকি অতিরিক্ত রক্তপাতের কারনে রোগী মারাও যেতে পারে।

এধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে তাৎক্ষনিক কৃতিমভাবে প্লাটিলেট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়।আর এই কাজগুলো একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট করে থাকে।

প্লাটিলেট তৈরি করার নিয়ম-
প্রথমেই সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী এবং রক্তদানে সক্ষম এরকম ডোনার নির্বাচন করতে হবে।

প্লাটিলেট তিন পদ্ধতিতে করা যায়:-
১. এফোরেসিস (Apheresis)
২. প্লাটিলেট রিস প্লাজমা (PRP)
৩. প্লাটিলেট কনসেন্ট্রেট (PC)

#এফোরেসিস:-

এফোরেসিস পদ্ধতিতে প্লাটিলেট সেপারেশনের পূর্বে ব্লাড গ্রুপিং,স্ক্রীনিং,ক্রসমেসিং করতে হয়।সবকিছু ঠিক থাকলে একদিকে ডোনার থেকে ব্লাড সংগ্রহ করা হয় এবং মেশিনের সাহায্যে প্লাটিলেট আলাদা করা হয় অন্য দিকে রক্তের বাকি উপাদানগুলো (প্লাজমা,সেল) পুনরায় ডোনারের শরীরে ঢুকানো হয়।ডোনার থেকে প্লাটিলেট কাউন্ট করে সংগ্রহ করা হয়।এক্ষেত্রে প্লাটিলেট এর সাথে খুব কম পরিমান প্লাজমা যায়।এফোরেসিস মেশিনে প্লাটিলেট দান করলে করলে ১৫ দিন পর পুনরায় দান করা যায়।

#প্লাটিলেট_রিস_প্লাজমা:-

এই পদ্ধতিতে প্লাটিলেট তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে ডোনারের গ্রুপিং, স্ক্রিনিং,রোগীর সাথে ক্রসমেসিং শেষে, ডাবল ব্লাড ব্যাগে ডোনারের থেকে ৪৫০ মিলিলিটার ব্লাড কালেকশান করতে হয়।ব্লাড ব্যাগটিকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায়, নির্দিষ্ট আর.পি.এম এ, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেফ্রিজারেটর সেন্ট্রিফিউজের সাহায্যে সেন্ট্রিফিউজ করতে হয়। এর পর ব্লাডের উপরের প্লাজমা অংশটুকু দ্বিতীয় ব্যাগে পার করতে হয় বাফি কোট সহ, কেননা বাফি কোটে প্রচুর পরিমাণ প্লাটিলেট থাকে।এই ব্যাগের উপাদাগুলোই প্লাটিলেট রিস প্লাজমা হিসেবে রোগীর জন্য সরবরাহ করা হয়।

#প্লাটিলেট_কনসেন্ট্রেট:-

প্লাটিলেট কনসেন্ট্রেট এর ক্ষেত্রে প্লাটিলেট রিস প্লাজমার মতো একই নিয়ম, তবে প্লাটিলেট কনসেন্ট্রেট এর ক্ষেত্রে ত্রিপল ব্যাগে ব্লাড কালেকশন করতে হবে এবং প্রথমবার সেন্ট্রিফিউজ করার পর দ্বিতীয় ব্যাগে প্লাটিলেট রিস প্লাজমা সংগ্র করে পুনরায় ব্যাগটিকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায়, নির্দিষ্ট আর.পি.এম এ, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেফ্রিজারেটর সেন্ট্রিফিউজের সাহায্যে সেন্ট্রিফিউজ করতে হয় এবং সেন্ট্রিফিউজ শেষে ৫০-৬০ মিলিলিটার প্লাটিলেট কনসেন্ট্রেট রেখে বাকী প্লাজমাগুলো তৃতীয় ব্যাগে পার করতে হয়। ৫০-৬০ মিলিলিটার প্লাজমাই প্লাটিলেট কনসেন্ট্রেট প্লাজমা হিসেবে ব্যাবহার করা হয়।

সব শেষে একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট সকল ধরণের পরীক্ষানিরীক্ষার রিপোর্ট সহ প্লাটিলেত এর ব্যাগ প্রস্তুত করেন।

একজন ল্যাবরেটরি মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট কে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নির্ভুলভাবে এই কাজগুলো করতে হয়।এর একটি সামান্য ভুল হলে রোগীর মৃত্যুর মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে।নিজের জীবনের অনেক ঝুকি নিয়ে কাজগুলো করতে হয়।

এমন কি ডাক্তার, নার্সদের সাথে তাল মিলিয়ে ঈদের ছুটির চিন্তা বাদ দিয়ে পরিবার পরিজনদের কথা ভুলে রোগনির্ণয় এর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে মেডিক্যাল টেকনোজিস্ট’রা।

যারা (মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট) রোগীর ব্লাড সুগার টেস্টের রিপোর্ট না দিলে রোগীর অপারেশন স্থগিত থাকে আজ তাদের অবদানের কথা ভুলে গেলে চলবে কি করে!

মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পেশা নানা সমস্যায় জর্জরিত, সবাই আজ হতাশ,মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট’দের অবমূল্যায়িত করে দেশের স্বাস্থ্য খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাওয়াটা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।

ঈদে ডিউটরত সকল মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ভাইবোনদের প্রতি রইলো শুভকামনা, সকলকে জানাই ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা।

মোঃ মুমিনুর রহমান
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব)
সাবেক শিক্ষার্থী, আই.এইচ.টি,রাজশাহী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category




error: Content is protected !!
error: Content is protected !!