• শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন

প্রতারণার অভিনব কৌশল, টাকা নিলেও জমি রেজিস্ট্রি দিতে টালবাহানা

Reporter Name / ২৩৯ Time View
Update : রবিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২১

একটি পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করার কথা বলে ৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা নিয়েও জমি রেজিস্ট্রি দিতে নানা টালবাহানা ও বিভিন্ন অপকৌশলে পার করেছেন প্রায় ১৫ মাস। বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে স্থানীয় সালিশ, থানা পুলিশ ও আদালতেও কোন জমি রেজিস্ট্রি বা টাকা ফেরত না পাওয়াসহ কোন সমাধান না পেয়ে বিপাকে ভুক্তভোগী গ্রাম্য পশু চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম। ঘটনাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের টাকাহারা-দোগাছি মৌজার ০.২৯৭৫ একর বা ১৮ কাঠা ফসলী জমিকে নিয়ে। দলিল করেও জমি রেজিস্ট্রি না দিয়ে পালিয়ে যাওয়া, বিভিন্ন অযুহাত দেখানো, কম দামী অন্য জমি রেজিস্ট্রি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া, এমনকি টাকা ফেরত দেয়ার কথা বললেও তার কোনটাই করছেন না জমির মালিক ও প্রতারক শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর মিয়াপাড়ার মৃত খলিল উদ্দিন মন্ডলের ছেলে মো. মনিরুল ইসলাম। এতে টাকা দিয়েও গত ১৫ মাস ধরে জমি বা টাকা ফেরত না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের আমলাইন গ্রামের মো. উমেদ আলীর ছেলে প্রতারক মো. রফিকুল ইসলাম।

জমির দলিল, প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী রফিকুল ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ মাস আগে জমিটির বিক্রয় করার সংবাদ পাওয়া যায় মাধবপুর গ্রামের মৃত জবদুল হকের ছেলে মো. শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে। পরের দিন ৫০ হাজার টাকা বায়না বাবদ অগ্রিম শফিকুলের মাধ্যমে প্রতারক মনিরুলকে ৫০ হাজার টাকা পশু চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম। তার ১০ দিন পর নাচোল সাবরেজিস্টারের অফিসে জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার কথা হয় ৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকায়। সেদিন মেয়ের অসুস্থতার কথা বলে রেজিস্ট্রি দিতে আসেনি মনিরুল। পরে ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর আবারো দিন হয় জমি হস্তান্তরের। রেজিস্ট্রি অফিসে কয়েকজন পাওনাদার আছে, তাই সেখানে টাকা লেনদেন করা যাবে না বলে জানায় প্রতারক মনিরুল। তাই তার আগের দিন ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় গোমস্তাপুর বাজারের একটি হোটেলে বসে বাকি ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা লেনদেন হয়। পরের দিন সকালে জমি রেজিস্ট্রি দেয়ার কথা থাকলেও বেলা ৩টায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে উপস্থিত হয় প্রতারক মনিরুল। সেসময় দলীল লেখকরা চাপ দিলে টাকা নেয়ার কথাও স্বীকার করে। এরপর জমি রেজিস্ট্রি দিতে টালবাহানা শুরু করলে তাকে ধরে নিয়ে আসা হয় ক্রেতা রফিকুল ইসলামের গ্রাম আমলাইনে।

জমিটির ক্রেতা পশু চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, ২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ধরে নিয়ে আসার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১ লক্ষ টাকা দিয়ে বাকি টাকা রবিবার ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় তার স্ত্রী। তারপর আর কোন খবর নাই। প্রায় ১ মাস পর তাকে পায় নাচোলের মির্জাপুরে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি টুনা মেম্বার, ইউপি সদস্য মজিবুর, সবুরের উপস্থিতিতে তখনই জমি রেজিস্ট্রি দিতে চায়। পরে নিজেই ফোন দিয়ে পুলিশ ডাকলে স্থানীয়দের কাছে ঘটনার বিস্তারিত শুনে তাকেই আটক করে পুলিশ। ওসি তার অভিভাবকদের ফোন দিয়ে ডেকেও না পেয়ে আমাকে মামলার পরামর্শ দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা করি। থানায় টাকা নেয়ার কথাও স্বীকার করে প্রতারক মনিরুল এবং পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করে। এরপর গোলাবাড়িতে গতবছরের ২০ জানুয়ারী আবারো পেলে টাকা ফেরত দিবো বলে স্ট্যাম্প করে। কিন্তু জমি বা টাকা ফেরত কিছুই করছে না।

মুঠোফোনে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে ফোনে কোন কথা বলবো না। মামলা চলমান রয়েছে। যা হওয়ার আদালতে হবে। নাচোল থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) সেলিম রেজার সাথে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category