গাজী মোহাম্মদ হানিফ :-
সোনাগাজীর থাক খোয়াজের লামছি মোজার ১২০ শতক ক্রয়কৃত জমি রেজিস্ট্রি দলিলপত্রের মাধ্যমে বিক্রেতাকে ফেরত দিবে মর্মে, বিক্রেতা চরডুব্বা গ্রামের মৃত সামছুল হকের স্ত্রী বৃদ্ধা তাহেরা বেগমের কাছ থেকে জমির মূল্য বাবদ আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের পল্লী আদালতের দেয়া সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পে সাক্ষর করে পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহণ করেন জমির ক্রেতা সোনাপুর গ্রামের সোলতান আহমদের পুত্র আবুল বাশার। অতঃপর বিবাদী নানান অজুহাতে জমি ফেরত না দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে মর্মে অভিযোগ করেছেন মৃত সামছুল হকের বৃদ্ধা স্ত্রী তাহেরা বেগম ও তার পূত্র সাদেক হোসেন (৫৫)।
বাদীপক্ষের এজাহার ও মৌখিকভাবে বর্ণিত ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সোনাগাজী উপজেলাধীন থাক খোয়াজের লামছি মোজার দিয়ারা ৩৯৪ নং খতিয়ানের দিয়ারা ১২৫৪/১ দাগে ৬৯ শতক, দিয়ারা ১২৫৯/২ দাগে ৪২ শতক, দিয়ারা ১২৫০/২ দাগে ৩৪ শতক, দিয়ারা ১২৫৮ দাগে ৪২ শতক, ১২৫৩/১ দাগে ৪০ শতক, দিয়ারা ১২৫২/১ দাগে ১৫০ শতক একুনে ৩৭৭ শতক ভূমিতে মৃত সামছুল হক মালিক ও দখলদার ছিলেন। এমতাবস্থায় ০১/০৬/১৯৯৬ ইং তারিখে ৩২৬৫ নং ছাফকবলা দলিলমূলে বর্ণিত দাগ সমূহের আন্দরে ১২০ শতক ভুমি বিবাদী সোনাপুর গ্রামের সোলতান আহমদের পুত্র আবুল বাশার এর নিকট বিক্রয় করেন। ক্রেতা আবুল বাশার তার ক্রয়কৃত ভূমিতে ক্রয় কালীন সময়ে শারিরীক অসুস্থ থাকায় দখলপ্রাপ্ত হননি বলে ৮নং আমিরাবাদ ইউনিয়নের পল্লী আদালতে ৪/p-ii/২০০৩ ইং মামলা দায়ের করেন। পল্লী আদালতের দেওয়া সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাদীপক্ষ বিক্রিত জমি ফেরত পেতে বিবাদীকে সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে লিখিত অঙ্গীকারনামা নিয়ে ভূমির মূল্য বাবদ পঞ্চাশ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বিবাদী ভূমি ফেরত দেওয়ার শর্তে টাকা গ্রহণ করেও ভূমি রেজিস্ট্রি না দিয়ে সময়ক্ষেপন করতে থাকে এবং একসময় টাকা লেনদেন ও লিখিত অঙ্গীকারনামার বিষয়টি বিবাদী সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন।
বাদীপক্ষ পরস্পর সূত্রে জানতে পারেন- আবুল বাশার জমি ফেরত দেওয়ার শর্তে পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহণ ও ২১/১২/২০০৯ ইং তার সাক্ষরিত অঙ্গীকারনামা ও পল্লী আদালতের রায় অগ্রাহ্য করে মতিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ২৯/০৯/২০২০ ইং সম্পাদিত দলিল নং ৩৮৮২/২০২০ মূলে আবুল বাশার বর্ণিত অপর বিবাদী সোনাপুর গ্রামের চোখধনের পূত্র নুরনবীর নিকট সমূদয় সম্পত্তি বিক্রয় করেন। বাদী ২৯/০৯/২০২০ ইং তারিখে বিষয়টি অবগত হয়ে উক্ত দলিলের ০৪/১০/২০২০ ইং তারিখে সহি মোহর নকল সংগ্রহ করে বিষয়টি নিশ্চিত হন।
আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির বাদীপক্ষের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, তিনি জানান- পল্লী আদালতে একাধিকবার বৈঠকের মাধ্যমে সাক্ষ্য প্রমাণাদি যাচাই বাছাই করে বিবাদীপক্ষ জমি ফেরত দেওয়ার শর্তে বাদীপক্ষের নিকট থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহণের সত্যতা পাওয়া যায়। বিবাদীপক্ষ জমি ফেরত দিমু দিচ্ছি করিয়া সময়ক্ষেপণ করছে।
বাদীনি বৃদ্ধা তাহেরা বেগম ও তারপূত্র সাদেক হোসেন (৫৫) জানান- বর্ণিত ভূমিতে তারা বর্তমানে খাজনাদি পরিশোধক্রমে ভোগদখলে রয়েছেন। বিবাদী আবুল বাশার পল্লী আদালতের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে অপর বিবাদী নুরনবীর নিকট জমি বিক্রি করেন। বিবাদী নুরনবী উক্ত জমি মিরশ্বরাই উপজেলার নুরুন নাহার নামে একজনের সাথে ১৯/১০/২০২০ ইং দানপত্র দলিল করে হস্তান্তর করেন। এতে তারা নানানভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন অভিযোগ করে প্রশাসনের নিকট আবুল বাশার ও নুরনবীর মধ্যে সম্পাদিত ৩৮৮২/২০২০ দলিল এবং নুরনবীর সাথে মীরশ্বরাই উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্ত্রী নুরুন নাহারের সাথে সম্পাদিত দানপত্র দলিল নং ৪২৯০/২০২০ বাতিল করার দাবি জানান।
প্রতারণার মাধ্যমে জমি হস্তান্তর করায় মৃত সামছুল হকের পূত্র সাদেক হোসেন (৫৫) বাদী হয়ে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে পিটিশন নং ১২০/২০২০ দায়ের করে দণ্ডবিধি ৪০৬/৪২০/১০৯ ধারায় প্রতিকার প্রার্থনা করেন। বৃদ্ধা তাহেরা বেগম বাদী হয়ে ১২/১০/২০২০ ইং ফেনীর সিনিয়র সহকারী জর্জ আদালতে দেওয়ানী ৮৬/২০২০ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। বৃদ্ধা তাহেরা বেগম ও তারপূত্র সাদেক হোসেন তাদের সম্পত্তি ফিরে পেতে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।
বিবাদী নুর নবী জানান এটা আমাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি।