বরিশালে স্কুল শিক্ষার্থীর হত্যা, শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
সুমন খান:
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় বলদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যায়ের ১০ম শ্রেনী পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায়, স্কুলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল ও কর্মসূচি পালন করছে স্কুলের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এলাকার মহসিনের ছেলে মনির হোসেন বলদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র। গত শুক্রবার নেছারাবাদ থানার বলদিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে রাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মনির আত্মহত্যা করে।
আঘটনায় শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা স্কুলের বিভিন্ন অনিমের অভিযোগ এনে ধারাবাহিক বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলেন স্কুলে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষকরা পরীক্ষার ফি সহ অন্যান্য পাওনাধি চেয়ে শিক্ষার্থীদের তিরস্কার করে। পাশাপাশি তারা স্কুলে তাদের বেতনের বিপরীতে কোন রশিদ না দেয়া, ওয়াই ফাই বিল বাবৎ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০ টাকা, প্রাইভেট বন্ধ দিলে ১০ টাকা জরিমানা, বেঞ্চে দাড় করানো, স্কুল বন্ধকালীন সময়ে বিদ্যুৎবিল সহ অন্যান্য চাদা আদায় সহ অশোভনীয় আচরনের ও অভিযোগ তুলে। শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠি মনিরের মৃত্যুর প্রকৃত কারন উৎঘাটন করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবী করে। মহামারি করোনায় স্কুল কলেজ বন্ধের মধ্যে পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জানায় আমাদের এবং আমাদের অভিভাবকদের অনুরোধে শিক্ষকরা পরীক্ষা নিয়েছে।
এদিকে স্কুলের উপর বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিহির কুমার রায় বলেন শিক্ষার্থীদের সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন আমরা বরং মনিরের লেখাপড়ার সকল দায় দায়িত্ব নিয়েছি। ওর সকল পড়া লেখার খরচ ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা কোন উদ্দেশ্যে বিক্ষোভ করছে তা আমার বোধ গম্য হচ্ছে না, এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছত্ত্বার বলেন আমরা সর্বদা শিক্ষার্থীদের ভাল চাই। আমার একটা ঘোষনা আছে যে ফরম পূরনের জন্য কোন শিক্ষার্থী যেন আর্থিক সমস্যার কারনে বাধাগ্রস্থ না হয়। যে শিক্ষার্থী যা দিবে তার বাকী টাকা আমি দিব।
এ প্রসংগে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন মনিরের মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। তার মৃত্যুতে স্কুলের কর্মকান্ডে যদি কোন বিন্দু পরিমান দোষী হয় তাহলে তার সুষ্ঠ বিচার হবে, পাশাপাশি অন্য যে সব কারন রয়েছ তাও দেখা হবে। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছত্তার আশ্বস্ত করে বলেন তোমাদের অভিযোগের সত্যতার ভিত্তিতে আগামী সোমবার প্রকাশে এই সমস্যার সমাধান করা হবে। তার আশ্বাসে শিক্ষার্থী সোমবার পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগীত করছে। এ
নিহত মনিরের মামা জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান দীর্ঘদিন যাবৎ তার ভাইগ্না মনির পারিবারিকভাবে আর্থিক সমস্যায় ভূগতেছিল। পাশাপাশি স্কুল হতে পরীক্ষার টাকা চাওয়া ও তার মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন নিহত মনিরের বাবা মহসিন দীর্ঘদিন ধরে তার শ্যালকের স্ত্রী জেসমিনের সাথে পরকিয়ায় মত্ত্ব ছিল। পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করে তার সন্তান মনির সহ তিন সন্তানকে রেখে অন্যত্র থাকত। সন্তানদের কোন খোজ খবর রাখত না। মনিরের মাকে নানা ভাবে হয়রানী ও নির্যাতন করতো।
মনির মামার অভিযোগ তার বাবা ও সৎ মায়ের জন্য মনির আত্মহত্যা করেছে। মনিরের মৃত্যুর দিন মনির তার বাবার কাছে ফোনে পরীক্ষার টাকা চাইলে তার বাবা টাকা না দিয়ে বরং তাকে তিরস্কার করে এবং বলে যা মর গিয়ে এমনটাও অভিযোগ করে মনিরের মামা। স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের জোর দাবী মনির যাদের কারনে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে যথোপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হোক।